সরকার নির্ধারিত কমপ্লায়েন্স মেনে ব্যবসা করে সুপারশপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: খোলা বাজারের তুলনায় সুপারশপে পণ্যের মূল্য পার্থক্য থাকায় তার দায় উৎপাদকদের। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) নির্ধারণে সুপারশপের কোনো হাত নেই। সেটি উৎপাদকরাই নির্ধারণ করেন। তাই এমআরপি নির্ধারণে সুপারশপের হাত আছে, এমন তথ্য বিভ্রান্তিকর বলে মনে করেন সুপারশপের প্রতিনিধিরা। এছাড়া সরকার নির্ধারিত সব ধরনের কমপ্লায়েন্স (সরকারি নিয়ম) মেনেই ব্যবসা করেন তারা, যা খোলা বাজারের দোকানের ক্ষেত্রে নেই।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর উৎপাদনকারী/সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও সুপারশপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্যাকেটজাত নিত্যপণ্যের (চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি, ডাল, লবণ প্রভৃতি) মূল্যের বিষয়ে মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানান তারা। সংস্থার মহাপরিচালক মো. শফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মহাপরিচালক বলেন, সুপারশপে ১২০ টাকা কেজি দরে কেনা খোলা সুগন্ধি চাল প্যাকেটজাত করে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেটি হতে পারে না। এক কেজি চালের সর্বোচ্চ ৫ টাকা দামের ব্যবধান হতে পারে। কিন্তু প্যাকেটজাতে অস্বাভাবিক মুনাফার কারণে দামের প্রভাব পড়ছে খোলাবাজারে। এ ব্যবধান কমাতে কাজ করা হবে। কত দাম পর্যন্ত পণ্য বিক্রি করা যাবে সেটা নির্ধারণ করা দরকার। এছাড়া বিভিন্ন আমদানি পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি করা হয় সুপারশপে। আমদানি পণ্যে যথাযথ তথ্য থাকে না। সেগুলো দেখা হবে এখন থেকে।

সভায় ভোক্তার মহাপরিচালক প্যাকেটজাত পণ্যের দামের পার্থক্য সম্পর্কে জানতে চাইলে এসিআই লজিস্টিকসের (স্বপ্ন সুপারশপ) হেড অব সাপ্লাই চেইন তমাল পাল বলেন, ‘উৎপাদকরা আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কথা আমাদের জানিয়েছেন। আমরা পুষ্টি সয়াবিন তেলে ৩৫ টাকা ছাড়ে বিক্রি করেছি, যা কোনো কাঁচাবাজারে পাবেন না। আমরা লবণ ৭ টাকা কম দামে বিক্রি করেছি, সেটাও কাঁচাবাজারে ২-৩ টাকা কমে কোথাও কোথাও পেতে পারেন। আমরা এসিআই ফ্রেশ ব্র্যান্ডের আটা-ময়দা ১০ টাকা ছাড়ে বিক্রি করেছি, সেটাও কাঁচাবাজারে ২ থেকে ৫ টাকা কমে পেতে পারেন। আমরা ইস্পাহানি চা বিক্রি করেছি ২০ টাকা ছাড়ে। স্বপ্ন, মীনা বাজারসহ সব সুপারশপে এই ডিসকাউন্ট নানা সময় ৩০০টির বেশি পণ্যে থাকে।’

ভোক্তার মহাপরিচালক বলেন, ‘মিনিকেট চাল বলে কিছু নেই। এটি এ নামে বিক্রি প্রতারণা। এটি এ নামে বিক্রি বন্ধ রাখতে চাচ্ছি।’ এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে স্বপ্ন সুপার শপের হেড অব মার্কেটিং মাহাদী ফয়সাল বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রত্যেকটি প্রাইসিংয়ের ডকুমেন্ট আছে। তথ্য গোপন করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা মূল্য নির্ধারণে চাপ প্রয়োগ করিÑএ তথ্য আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’

মীনা বাজারের হেড অব সাপ্লাই চেইন আবু রায়হান ভূঁইয়া আলবেরুনী বলেন, ‘উৎপাদকরা যখন মূল্য নির্ধারণ করেন তখন সেটি তাদের স্থানীয় ভ্যাট অফিসে জমা দেন। সব ব্রেকডাউন দিয়ে জমা দেয়ার পর অনুমোদিত হলে এরপর সেটি সার্কুলার করে। এই অনুমোদনের পর তারা আমাদের ই-মেইল দিয়ে জানায়। আগের প্রাইস ৫ টাকায় কিনে ৮ টাকা বিক্রি করতেন। এখন ৮ টাকায় কিনে ১০ টাকায় বিক্রি করতে হবে। ওরা যখন প্রাইস দেয় তখন আমরা আরেকটু কমিয়ে দিতে বলি। এখানে ওদের যে মার্কাপ এটা আমরা বাড়াই না। ভ্যাট কর্তৃপক্ষকে সব খরচের ব্রেকডাউন দিতে হয় একটি ফরম্যাটে। তারপর মূল্য অনুমোদন দেয়। এটি ১৯৯২ সাল থেকে প্রচলিত এদেশে। আমরা শুধু উৎপাদকদের কাছ থেকে পণ্য নিয়ে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিই। আমরা শুধু ট্রান্সফারের কাজ করি, এখানে কোনো ভ্যালু এডিশন নেই।’

সভায় অন্য সুপারশপের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০