সরকার বিএনপি নেতাদের নামে কুৎসা রটাচ্ছে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বর্তমান নিপীড়ক সরকার ইউটিউবে নানা চ্যানেল খুলে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমিসহ দলের সিনিয়র নেতাদের নামে প্রতিনিয়ত কুৎসা রটাচ্ছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে কণ্ঠ নকল করে বিভিন্ন ধরনের বানোয়াট ফোনালাপ, কাহিনী বানিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে- যার সঙ্গে সত্যতার কোনো বালাই নেই।’

রোববার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, ‘সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জন্য পাঁচ লাখ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট নিয়োগ দিয়েছে যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তারা সবসময় বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালাতে লিপ্ত রয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মিথ্যা, কাল্পনিক গল্প বানিয়ে কাটপিস তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমন করতে আবারও নিষ্ঠুর নতুন খেলায় মেতেছে পুলিশ। রাজনৈতিক দলগুলোর সাংবিধানিক অধিকার সভা-সমাবেশে হামলা করে গুলি চালিয়ে নেতাকর্মীদের হত্যার পাশাপাশি এখন শর্টগানের গুলি চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের চোখ অন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ভোলায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে ছাত্রদল নেতা নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী মো. শাওন প্রধানকে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে ওইসব স্থানসহ নেত্রকোনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, বরগুনা, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, ঝালকাঠিতে পুলিশ শর্টগানের গুলি দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীসহ ছাত্রদল, যুবদলের কর্মীদের শরীর ও চোখ-মুখ ঝাঁজরা করে দিয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে তারা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। ইতোমধ্যে অনেকে চোখ হারিয়েছে, পা হারিয়েছে, হাত হারিয়েছে কিংবা অসংখ্য গুলি শরীরে নিয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে।’

রিজভী বলেন, ‘গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার পর শর্টগানের গুলি দিয়ে নেতাকর্মীদের পঙ্গু করে দেওয়ার আরেক নতুন নিষ্ঠুর নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে সরকার। পুলিশকে ব্যবহার করে এটি একটি নতুন নিপীড়ণের পথ অবলম্বন করা হয়েছে। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের আরেকটি নতুন ফর্মুলা। আমি এসব প্রতিহিংসামূলক নিষ্ঠুর ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এ ধরনের মরণঘাতী কর্মসূচি থেকে সরে আসার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে বিদেশিদের সহায়তায় টিকে থাকা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এখন তারা শত শত কোটি টাকা খরচ করে ইউটিউব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে লাগামহীন মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই মিথ্যচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। কারণ সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনে দেশের মানুষ আজ অতিষ্ঠ। দেশের মানুষ দু’বেলা পেট ভরে খেতে পাচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার সকল ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের জীবন আর চলছেই না।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা লুট করে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। মেগা প্রকল্প ও কুইক রেন্টালের নামে লুটপাটের ভর্তুকি এখন সাধারণ মানুষের ঘাড়ে পড়েছে। তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে কৃষিসহ মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন এখন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে মানুষের ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই, ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নেই। সত্য কথা বললেই নামে মিথ্যা মামলা ও নির্যাতনের খড়গ। সারাদেশে আবারও বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকেমীদের নামে মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারের হিড়িক চলছে। এ অবস্থায় মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরাতেই বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নামে বিভিন্ন অপপ্রচারে মেতে উঠেছে সরকার।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০