নিজস্ব প্রতিবেদক : শীতের আগমনে সবজির দাম কমতে শুরু করে। তবে এখন ভরা মৌসুমে বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, গত মাসের শুরুতে বৃষ্টিতে কিছুটা ফলন নষ্ট হয়েছে। আর হরতাল অবরোধ ও নির্বাচনকে ঘিরে বিরাজমান শঙ্কায় বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৩০ বা ৪০ টাকার শিম বাজারে এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতের শুরুতে ফুলকপির দাম কমে ৩০ টাকা হলেও বর্তমান বাজারে ছোট ফুলকপির দাম ৫০ টাকা। বেগুন কিছুদিন আগেও ৫০ বা ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। শীতের শুরুতে সবজির দাম কমলেও কয়েকদিনের ব্যবধানে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বাজারে।
ক্রেতারা বলছেন, এর আগে শীতের এই সময়ে এত দামে কেউ কখনো সবজি কেনেননি। বিক্রেতাদের দাবি গত মাসের শুরুতে বৃষ্টিতে কিছুটা ফলন নষ্ট হয়েছে। এছাড়া, হরতাল অবরোধ ও নির্বাচনের কারণে বাজারে প্রভাব পড়েছে।
এদিন বাজারে গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৮০ টাকা, মিস্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা আর মুলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এছাড়া কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি মানভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, পটোল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, পেঁয়াজের ফুলকা প্রতি আঁটি ২০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়স প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ক্ষীরা প্রতি কেজি ৮০ টাকা এবং পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও দাম না কমার বিষয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, নির্বাচন উপলক্ষে গ্রামে চলে গেছেন অনেকেই। ফলে স্থানীয় বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষক ঢাকায় সরবরাহ কমিয়েছে। পাশাপাশি নভেম্বরের মাঝামাঝি ও ডিসেম্বরের শুরুতে কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে দামের ক্ষেত্রে।
অন্যদিকে নতুন আলুর কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মানভেদে নতুন পেঁয়াজের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর বাজারে গত সপ্তাহ থেকে ব্রয়লার মুরগির দরও কিছুটা বাড়তি। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে। আর ডিমের দর গত সপ্তারে তুলনায় ডজনে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা দরে।
রমজান আসতে এখনও দেরি দুই মাসের বেশি। তবে এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে ছোলার দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডালজাতীয় খাদ্য পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। একই সঙ্গে ছোলার ডাল, মুগডাল, অ্যাংকরসহ প্রায় সব ধরনের ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ছোলার কেজি ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, যা কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুগডালের কেজি দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। একই সঙ্গে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে।