সরষে চাষে আগ্রহ বাড়ছে ফটিকছড়ির কৃষকদের

ওবাইদুল আকবর রুবেল, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম): ভোজ্যতেলের দাম ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় লাভের আশায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় প্রান্তিক কৃষক পর্যায়ে সরষে চাষে আগ্রহ বাড়ছে। আবাদি-অনাবাদি জমিতে কৃষকরা এখন সরষে চাষ করছেন।

চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও যথাযথ পরিচর্যার কারণে পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন না থাকায় এবারও সরষের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা। ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় সরষে চাষের দিকে ঝুঁঁকছেন কৃষকরা।

উপজেলার ভুজপুর, হারুয়ালছড়ি, পাইন্দং, ধর্মপুর, সুন্দরপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন হলুদ রঙের সরষে ফুলের ছড়াছড়ি। হলুদের সমারোহ আর মৌমাছির কলতানে সরষে ফুলের সুগন্ধিময়ে সরষেক্ষেত দেখে যে কারও মন মুগ্ধতায় মেতে উঠবে।

ভুজপুরে কয়েকজন চাষি জানান, ‘অন্য যেকোনো আবাদের চেয়ে সরষে চাষে খরচ ও পরিশ্রম দু’টিই কম লাগে। তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে সরষের ফলন পাওয়া যায়। আবহাওয়া অনুকূলে আছে, তাই সরষের চাষ বেশি হয়েছে।’

হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের ফটিকছড়ি বিলের মো. ফরিদ, কামাল নামে কয়েক কৃষক জানান, ‘সাধারণত প্রতি বছর আমন ও ইরি এই দুই ফসলই আমরা কৃষকরা আবাদ করতাম। বাকি বেশির ভাগ সময় জমি পড়ে থাকত। এবারে সেই পতিত জমিতে আমরা সরষের আবাদ করছি। এতে করে এক মৌসুমে কমপক্ষে তিনবার ফসল আবাদ করা সম্ভব।’

কাঞ্চননগর ইউনিয়নের মুজরীর চরের কৃষক আলী আহমদ ও রিয়াজ উদ্দিন জানান, ‘সরষে চাষে রোপণ থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বাড়তি তেমন কোনো খরচ নেই। শুধু জমিতে সার প্রয়োগ করতে হয়। এতে বাড়তি কোনো সেচ দিতে হয় না, যার ফলে সরষে চাষে আমরা কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছি। অপর অনেক কৃষকও সরষে চাষের দিকে ঝুঁকছেন।’

ধর্মপুর ইউনিয়নের সোলায়মান আকাশ বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কিছুদিন পরে দানা সরষে ঘরে তুলতে পারব।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘এ বছর সরকারিভাবে উপজেলায় ১৬০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ করা হয়েছে। যা গত বছর ছিল ১৫০ হেক্টরে। কিন্তু বেসরকারি হিসাবে এ আবাদ আরও বেশি হবে। এ অঞ্চলের মাটি সরষে চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় দিন দিন আবাদ বাড়ছে। এছাড়া সরষেক্ষেতে মধুর মৌচাক বসিয়ে মধু সংগ্রহের জন্য অত্যাধুনিক মেশিন আনা হয়েছে। আমন ধান কাটার পরে সেই জমিতে সরষের আবাদ করা যায়। পরবর্তীতে একই জমিতেই চাষ করা যায় বোরো ধানের। এতে করে কৃষকরা একটি বোনাস ফসল হিসেবে সরষের আবাদ করছেন। সরষে চাষে খরচ অত্যন্ত কম, আবার ফলন ভালো। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানারকম পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন এ কৃষি কর্মকর্তা।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০