প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: মাত্র পাঁচ দিন আগে প্রবাস থেকে দেশে আসেন আবদুর রশিদ। গ্রামের মসজিদের কমিটি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, মারা যাওয়ার পর তাকে কোপানো হয়। বর্বরোচিত এ ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা এলাকার।
গতকাল দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্নের পর মরদেহ হস্তান্তর করা হয় তার স্বজনদের কাছে। এর আগে বুধবার রাতে জেলার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে ঘটে এ বর্বরতা। নিহত আবদুর রশিদ (৫৫) রসুলপুর গ্রামের মৃত মতি মিয়ার ছেলে এবং দীর্ঘদিন ধরেই সৌদিআরব প্রবাসী ছিলেন।
নিহতের পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর শাহী নূর জামে মসজিদ কমিটির হিসাব-নিকাশ নিয়ে এক সভায় বসেন স্থানীয়রা। দীর্ঘদিন ধরে মসজিদ কমিটির সভাপতি হিসেবে উম্মেদ আলী এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাবেক ইউপি সদস্য ফিরোজ মিয়া দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সভায় অন্যদের ন্যায় সেক্রেটারি ফিরোজ মেম্বারের ভাতিজা প্রবাসী আব্দুর রশিদও উপস্থিত ছিলেন। মাত্র পাঁচ দিন আগে তিনি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন।
সভায় এক পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা চলছিল। এ সময় আবদুর রশিদ বলেন, ‘মসজিদ কমিটি নিয়ে দলাদলির দরকার নেই, যে কমিটি আছে তা-ই থাকবে।’ তার কথার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় মৃত লিয়াকত মিয়ার ছেলে লিটন ও মৃত আনসার আলীর ছেলে জিল্লু মিয়া দাবি করেন, তাদের বাড়ির সফর আলীকে মসজিদ কমিটির সভাপতি করতে হবে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আবদুর রশিদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপর বাদ এশা লিটন ও জিল্লু মিয়া গংরা আবদুর রশিদের ওপর হামলা করে তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মুমূর্ষু অবস্থায় আবদুর রশিদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) আনিসুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রথমে ওই ব্যক্তিকে সরাইলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান। মারা যাওয়ার পর সেই বেসরকারি হাসপাতালে সরাইল থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন। ওসি জানিয়েছেন, মারা যাওয়ার সময় তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না, মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করা হয়েছে। তারপরও যেহেতু একজন মারা গেছেন, অভিযোগ দিলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’