প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : মাত্র পাঁচ দিন আগে প্রবাস থেকে দেশে আসেন আবদুর রশিদ। গ্রামের মসজিদের কমিটি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ মিলেছে। আবার পুলিশ বলছে,মারা যাওয়ার পর তাকে কোপানো হয়! বর্বরোচিত এই ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা এলাকার।
বৃহস্পতিবার (০৭ জুলাই) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত সম্পন্নের পর মরদেহ হস্তান্তর করা হয় তার স্বজনদের কাছে। এর আগে বুধবার রাতে জেলার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে ঘটে এই বর্বরতা। নিহত আবদুর রশিদ (৫৫) রসুলপুর গ্রামের মৃত মতি মিয়ার ছেলে এবং দীর্ঘদিন ধরেই সৌদিআরব প্রবাসী ছিলেন।
নিহতের পরিবার, এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর শাহী নূর জামে মসজিদ কমিটির হিসেব-নিকাশ নিয়ে এক সভায় বসেন স্থানীয়রা হয়। দীর্ঘদিন যাবতই এই মসজিদ কমিটির সভাপতি হিসেবে উম্মেদ আলী এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) ফিরোজ মিয়া দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সভায় অন্যান্যদের ন্যায় সেক্রেটারি ফিরোজ মেম্বারের ভাতিজা প্রবাসী আব্দুর রশিদও উপস্থিত ছিলেন। মাত্র পাঁচ দিন আগে তিনি সৌদিআরব থেকে দেশে ফিরেছেন। সভায় এক পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা চলছিলো। এসময় আবদুর রশিদ বলেন, ‘মসজিদ কমিটি নিয়ে দলাদলির দরকার নাই, যে কমিটি আছে তা-ই থাকবে।’ তার কথার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় মৃত লিয়াকত মিয়ার ছেলে লিটন ও মৃত আনসার আলীর ছেলে জিল্লু মিয়া দাবী করেন, তাদের বাড়ির সফর আলীকে মসজিদ কমিটির সভাপতি করতে হবে। এই নিয়ে তাদের সাথে আবদুর রশিদের বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর বাদ এশা লিটন ও জিল্লু মিয়া গংরা আবদুর রশিদের উপর হামলা করে তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে।শোরচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মুমূর্ষু অবস্থায় আবদুর রশিদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাবার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
সহকারি পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) আনিসুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রথমে ওই ব্যক্তিকে সরাইলের একটি বে-সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান। মারা যাওয়ার সময় সেই বে-সরকারি হাসপাতালে সরাইল থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন। ওসি জানিয়েছেন, মারা যাওয়ার সময় তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিলো না, মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করা হয়েছে। তারপরও যেহেতু একজন মারা গেছেন, অভিযোগ দিলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’