Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 6:11 pm

সর্বজনীন পেনশন বিধিমালার গেজেট প্রকাশ, ১৭ আগস্ট উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক: সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইনের বিধিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার। সোমবার (১৪ আগস্ট) বিজি প্রেস থেকে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই বিধিমালা সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে। যা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা স্বাক্ষরিত গেজেটে কোন ব্যক্তি কিভাবে, কোন পদ্ধতিতে এই পেনশন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারবেন সেসব বিষয় বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

গত ২৪ জানুয়ারি দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আনতে জাতীয় সংসদে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল ২০২৩’ পাস হয়েছে। আগামী ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।

কারা অংশ নিতে পারবেন এই কার্যক্রমে

প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়েছে, (১) বিধি ৪ এর অধীন নিবন্ধিত কোনো ব্যক্তি নিম্নবর্ণিত কোনো স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন, যথা—

(ক) প্রবাস স্কিম (প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকগণের জন্য): বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক তফসিলে বর্ণিত চাঁদার সমপরিমাণ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রায় প্রদানপূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন। তিনি দেশে প্রত্যাবর্তনের পর সমপরিমাণ অর্থ দেশীয় মুদ্রায় পরিশোধ করিতে পারিবেন এবং, প্রয়োজনে, স্কিম পরিবর্তন করিতে পারিবেন, তবে, পেনশন স্কিমের মেয়াদ পূর্তিতে পেনশনার দেশীয় মুদ্রায় পেনশন প্রাপ্য হইবেন।

খ. বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীগণের জন্য: বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী বা উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক তফসিলে বর্ণিত হারে চাঁদা প্রদানপূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন; এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হইতে উহার কর্মচারীগণের জন্য এই স্কিমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে স্কিমের চাঁদার ৫০% (শতকরা পঞ্চাশ ভাগ) কর্মচারী এবং অবশিষ্ট ৫০% (শতকরা পঞ্চাশ ভাগ) প্রতিষ্ঠান প্রদান করিবে; এবং কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই স্কিমে অংশগ্রহণ না করিলে, উক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী নিজ উদ্যোগে এককভাবে এই স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন।

(গ) সুরক্ষা স্কিম স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকগণের জন্য: অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ যেমন- কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, ইত্যাদি তফসিলে বর্ণিত হারে চাঁদা প্রদানপূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন।

(ঘ) সমতা স্কিম (স্বকর্মে নিয়োজিত স্বল্প আয়ের নাগরিকগণের জন্য অশ প্রদায়ক পেনশন): বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক, সময় সময়, প্রকাশিত আয় সীমার ভিত্তিতে দারিদ্র্য সীমার নিম্নে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের ব্যক্তিগণ (যাহাদের বর্তমান আয় সীমা বাৎসরিক অনুষ্ঠ ৬০(ষাট) হাজার টাকা) তফসিলে বর্ণিত হারে চাঁদা প্রদানপূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন; এবং সমতা ক্রিমে কর্তৃপক্ষ বিধি ৯ অনুসারে সমপরিমাণ অর্থ জমা করিবে।

গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে- তফসিল অনুযায়ী প্রতিটি স্কিমের বিপরীতে বর্ণিত পরিমাণ চাঁদা প্রদান সাপেক্ষে উল্লিখিত হারে মাসিক পেনশনের (সম্ভাব্য) প্রাপ্যতা অর্জিত হইবে।

৪। স্কিমে অংশগ্রহণের যোগ্যতা ও নিবন্ধন (১) ১৮ (আঠারো) বৎসর বা অনুষ্ঠানের বয়স হইতে ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর বয়সী জাতীয় পরিচয়পত্রধারী সকল বাংলাদেশি নাগরিক তাহাদের জন্য প্রযোজ্য কোনো স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, বিশেষ বিবেচনায় ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর ঊর্ধ্ব বয়সের নাগরিকগণও স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন এবং সেইক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ হইতে নিরবচ্ছিন্ন ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হইবেন সেই বয়স হইতে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হইবেন।

(২) প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকগণ যাহাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নাই, তাহারা তাহাদের জন্য প্রযোজ্য স্কিমে পাসপোর্টের ভিত্তিতে নিবন্ধন করিতে পারিবেন: তবে শর্ত থাকে যে, সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করিয়া তাহার অনুলিপি কর্তৃপক্ষের নিকট জমা প্রদান করিতে হইবে।

আরও শর্ত থাকে যে, নিয়মিতভাবে পাসপোর্ট নবায়ন বা পুনঃইস্যুর ক্ষেত্রে নবায়নকৃত বা পুনঃইস্যুকৃত পাসপোর্টের অনুলিপি কর্তৃপক্ষের নিকট জমা প্রদান করিতে হইবে।

(৩) সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় থাকা ব্যক্তিগণ তাহাদের জন্য প্রযোজ্য স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, স্কিমে অংশগ্রহণ করিবার পূর্বে সংশ্লিষ্ট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা সমর্পণ করিতে হইবে।

(৪) কোনো স্কিমে নিবন্ধনের জন্য দেশে এবং প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকগণকে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত ফরম অনলাইনে পূরণ করিয়া আবেদন করিতে হইবে যাহার বিপরীতে আবেদনকারীর অনুকূলে একটি ইউনিক আইডি নম্বর প্রদান করা হইবে।

(৫) আবেদনে উল্লিখিত আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে এবং অনাবাসী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় ই-মেইলের মাধ্যমে ইউনিক আইডি নম্বর, চাঁদার হার এবং মাসিক চাঁদা প্রদানের তারিখ অবহিত করা হইবে।

৫। মাসিক চাঁদা প্রদান । (১) যে কোনো স্কিমে নিবন্ধিত হইলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উক্ত স্কিমের জন্য ধার্যকৃত হারে নিয়মিত চাঁদা প্রদান করিতে হইবে।

(২) নিবন্ধনের পর আবেদনকারী বিধি ৪ এর উপ-বিধি (৫) এ উল্লিখিত তারিখের মধ্যে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, Online banking, credit card বা debit card এর মাধ্যমে বা তফসিলি ব্যাংকের কোনো শাখায় OTC (Over the Counter) পদ্ধতিতে কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে মাসিক চাঁদা জমা করিবেন।