নিজস্ব প্রতিবেদক: অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যাতে মহামারীর মধ্যেও আশাবাদী হয়ে উঠেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বুধবার দিন শেষে বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৪২৩ কোটি (৩৪.২৩ বিলিয়ন) ডলার।
প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে আট মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।
কভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের জরুরি সহায়তা রিজার্ভে যোগ হওয়ায় এবং প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বাড়ায় রিজার্ভে এই উল্লম্ফন হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বুধবার রাতে বলেন, “করোনাভাইরাসের এই মহাসংকটের সময়ে আমাদের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক রিজার্ভ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়ানো, একটি খুবই ভালো খবর। রিজার্ভের এই উল্লম্ফন আমাদের সাহস জুগিয়েছে। আমরা সাহসিকতার সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করতে পারব বলে আশা করছি।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রিজার্ভ ছিল ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। এরপর গত আড়াই বছরে রিজার্ভ ৩১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে উঠানামা করেছে।
মঙ্গলবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। বুধবার আইএমএফের ৭৩ কোটি ২০ লাখ এবং চলতি জুন মাসের দুই দিনে (১ ও ২ জুন) ১৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার রেমিটেন্স যোগ হওয়ায় রিজার্ভ ৩৪ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছুঁয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ জুন পর্যন্ত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১৬ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। এই অংক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৯ শতাংশ বেশি।
করোনাভাইরাস সঙ্কটে আমদানি ও রপ্তানি তলানিতে নেমে এলেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এখনও অর্থনীতিতে আশার আলো জাগিয়ে রেখেছে। ঈদ সামনে রেখে সবাইকে অবাক করে দিয়ে মে মাসে ১৫০ কোটি ৩০ লাখ (১.৫ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।