সহজে টাকার জোগান পাওয়ার বড় উৎস পুঁজিবাজার

সম্প্রতি একটি সেমিনারে শিল্পমন্ত্রী পুঁজিবাজারে সরকারি শেয়ার ছাড়ার ওপর বেশ জোর দিয়েছেন। তিনি সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ব্যাংক খাতের ওপর চাপ কমাবার ও সহজে টাকার জোগান পাওয়ার জন্য পুঁজিবাজার একটি বড় উৎস এবং এটিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে যদি কোনো রকমের গাফিলতি থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ত্বরিত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়গুলো আলোচিত হয়। আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন সেন্টার ফর এনআরবির চেয়ারপারসন এমএস সেকিল চৌধুরী এবং পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ফকরুল আলম পাটোয়ারী, এফসিএ।

এমএস সেকিল চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি একটি সেমিনারে শিল্পমন্ত্রী এবং বিএসইসির (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) চেয়ারম্যান পুঁজিবাজার সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলেছেন। বিশেষ করে সরকারি শেয়ার পুঁজিবাজারে ছাড়ার বিষয়ে শিল্পমন্ত্রী বেশ জোর দিয়ে বলেছেন। তিনি সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি বলেছেন, ব্যাংক খাতের ওপর চাপ কমাবার ও সহজে টাকার জোগান পাওয়ার জন্য পুঁজিবাজার একটি বড় উৎস এবং এটিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করা উচিত। বিষয়টির স্বচ্ছতার ব্যাপারেও তিনি কথা বলেছেন। আমরা তার বক্তব্যে খুবই আশাবাদী। সরকারি শেয়ার বাজারে ছাড়ার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী ইতিপূর্বে অনেকবার বলেছেন কিন্তু আমরা তার কথা বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ এত দিন দেখিনি। এবারে তার সঙ্গে শিল্পমন্ত্রী যুক্ত হয়েছেন এবং তারা দুজনই সরকারের মন্ত্রিসভায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কাজেই তারা যদি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নেন তাহলে আশা করি সরকারি শেয়ারগুলো শিগগিরই পুঁজিবাজারে আসবে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে যারা বিনিয়োগ করে লোকসান করেন বিশেষ করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা বেশি হয়। কারণ সামান্য সঞ্চয় বিনিয়োগ করে যদি ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় তাহলে তাদের হতাশা সমাজে ছড়িয়ে পড়ে এবং সামাজিক অসামঞ্জস্যতার সৃষ্টি হয়। কারণ সমাজের অনেক মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রাকে একটু সহজ করতে পুঁজিবাজার বড় ভূমিকা পালন করে। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে যদি কোনো রকমের গাফিলতি থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ত্বরিত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আর দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা এ কারণেই প্রয়োজন, যাতে পরবর্তী সময়ে আরও বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা না থাকে।

ফকরুল আলম পাটোয়ারী বলেন, অনেক দিন ধরেই আমরা আশা করে এসেছি সরকারি শেয়ারগুলো বাজারে আসবে। অর্থমন্ত্রীও বহুবার আশ্বাস দিয়েছেন। এ শেয়ারগুলো পুঁজিবাজারে এলে বাজারের ভলিউম আরেকটু বাড়ত এবং বাজার সম্প্রসারিত হতো। সরকারেরও আন্তরিকতা আছে। তারা চায় একটি স্বচ্ছ বাজার সৃষ্টি হোক এবং পুঁজিবাজারের প্রতি মানুষের আস্থা তৈরি হোক। আর আস্থার সৃষ্টি না হলে বিনিয়োগকারীরাই কেন বা আসবেন বাজারে। দেশের বিনিয়োগকারীরা বহুবার আস্থা নিয়ে এসেছেন এবং নিরাশ হয়ে ফিরে গেছেন। এখন যদি আবার অর্থ মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের আন্তসম্পর্ক সহযোগিতাপূর্ণ হয়, তাহলে আমরা আশা করতে পারি বাজারে আরেকটু স্বচ্ছতা বাড়বে। ফলে আরও জনপ্রিয় হবে পুঁজিবাজার। তাছাড়া যেখানে মানুষ ব্যাংকে টাকা রেখেই আস্থা পায়নি, সেখানে পুঁজিবাজারে গত কয়েক বছরে যেভাবে উত্থান-পতন হয়েছে তাতে বিনিয়োগকারীদের আবার আস্থা ফিরে আসতে আরেকটু সময় লাগবে।

শ্রুতি লিখন: রাহাতুল ইসলাম

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০