Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 11:17 am

সাংবাদিকতার ধারেকাছেও নেই, এমন অনেকে সরকারি অফিসে বসে থাকে:ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তিন দশক পূর্তি উৎসবে এসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভুয়া সাংবাদিকদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘লেখা নেই, পড়া নেই, সাংবাদিকতা বোঝে না, সাংবাদিকতার ধারেকাছেও নেইÑএমন অনেকে সারাক্ষণ সরকারি অফিসে বসে থাকে। ভুয়া সাংবাদিকেরা যাতে অপসাংবাদিকতার বিকাশ ঘটাতে না পারে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।’

গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে তিন দশক পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেগুনবাগিচা এলাকার সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে আসেন ওবায়দুল কাদের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে জিএম কাদের, বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ওবায়দুল কাদের। কবুতর উড়িয়ে তিন দশক পূর্তি উৎসবের উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর তিনি নসরুল হামিদ মিলনায়তনে গিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। পরে কেক কাটেন।

শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা সমালোচনার বিরুদ্ধে নই। সমালোচনাই শুদ্ধ করে। সমালোচনা আমরাও করি। সেটা গঠনমূলক সমালোচনা হওয়া প্রয়োজন।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা স্বাধীনতা চান সরকারের কাছে। কিন্তু নিজেরা যেখানে কাজ করেন, সেখানে কি আপনি যা চাইছেন, তা লিখতে পারেন? আপনি যা দেখেন, তা কি লিখতে পারেন? সেটাই আমার বক্তব্য।’

সাংবাদিকতার নামে অপসাংবাদিকতা নিয়ে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকতার নামে, সাংবাদিকের নামে লেখা নেই, পড়া নেই, সাংবাদিকতা বোঝে না, ধারেকাছেও নেইÑএমন অনেকে, এমনকি অফিসেও গিয়ে দেখি, সরকারি অফিসে বসে থাকে সারাক্ষণ। ঢাকায়ও এ

 অবস্থা আছে। দুটো অফিস আমারও আছে। সেখানেও এই উপদ্রবটা আছে। এরা সত্যিকারের জার্নালিস্ট নয়। ভুয়া সাংবাদিকদের ব্যাপারে আপনাদেরও একটু সতর্ক হতে হবে।’

গঠনমূলক ও সৃজনশীল সাংবাদিকতাকে প্রধানমন্ত্রী সব সময় উৎসাহিত করেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগও একই নীতি অনুসরণ করে, বলেন তিনি। কোনো সাংবাদিক যাতে অর্থনৈতিকভাবে হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য সতর্ক আছেন বলে জানান।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, সাংবাদিক হিসেবে শক্তিশালী হতে চাইলে পেশাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। দলমত-নির্বিশেষে সাংবাদিকেরা জনকল্যাণে শক্তি ব্যবহার করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন জিএম কাদের।

ওবায়দুল কাদের ও জিএম কাদের চলে যাওয়ার পর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আসেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তিন দশক পূর্তি অনুষ্ঠানে বিএনপির পক্ষ থেকে কেক কাটেন।

শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে রিজভী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের জন্য সুখকর বিষয় নয়। সাংবাদিকদের জন্য এই আইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এমন একটি আইন, যে আইন থেকে সহজেই রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘যারা মুক্ত চিন্তার মানুষ, তারা তাদের মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে কারাবন্দি হয়েছেন। এমন একটি আইন দেশে বিদ্যমান। এমন পরিস্থিতিতে সংবাদপত্রের পথচলা দুঃসাধ্যের বিষয়।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তিন দশক পূর্তি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেছেন সংগঠনের সদস্যরা। দুপুর ১২টায় সেগুনবাগিচায় সংগঠনের প্রধান কার্যালয় থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। সেগুনবাগিচার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবার একই স্থানে এসে এটি শেষ হয়। এ সময় বাদক দলের সদস্যরা বিভিন্ন গানের সুর তোলেন। সঙ্গে ছিল সাজানো ঘোড়ার গাড়ি।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ, সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিনসহ সংগঠনের সাবেক নেতা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।