নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের সাইবার নিরাপত্তা জোরদারের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় এ নির্দেশ দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। পরে বিকালে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান বিদায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তায় আরও জোর দিতে বলা হয়েছে। জাতীয় তথ্যভাণ্ডারের নিরাপত্তার বিষয়টিও খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এছাড়া পরবর্তী সাবমেরিন কেব্?লের জন্য যে প্রকল্পে অনুমোদন দেয়া হয়েছে, সেটির কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর যেসব গ্যাস ও তেল পাইপলাইনে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেসব কাজও তাড়াতাড়ি শেষ করে সরবরাহ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে, যাতে পরিবহন খরচ না লাগে এবং তাড়াতাড়ি গ্যাস ও তেল সরবরাহ করা যায়।
এখন সাইবার নিরাপত্তাব্যবস্থা কেন জোরদার করতে বলা হয়েছে, বিশেষ কোনো কারণ আছে কি নাÑসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দু-তিন বছর ধরেই বিষয়টি দেখা হচ্ছে। এখন বিষয়টিতে আরও জোর দিতে এবং আধুনিক উপকরণ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। কোনোভাবেই যেন ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো বিষয় হ্যাক করা না যায়। এ ছাড়া ধীরে ধীরে ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যাওয়া হচ্ছে। এগুলোতেই যেন ভালো রকমের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকে।
এছাড়া ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা হয়েছে। বৈঠক শেষে বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সরকারের রাজস্ব খাতভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতো স্বায়ত্তশাসিত ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিতদের ক্ষেত্রেও আইনটি প্রযোজ্য হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব-সম্পর্কিত তথ্যাদি অর্থ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার প্রস্তাব সংযোজন করা হয়েছে সংশোধনীটিতে। আগেও অর্থ মন্ত্রণালয়কে এসব জানানো হতো, তবে এই সংশোধনীর মাধ্যমে এটি বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, এমনকি এসব প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে আসা দেশি-বিদেশি অনুদান এবং এসব অনুদানে গৃহীত প্রকল্পের আয়-ব্যয়ের হিসাবও দিতে হবে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। সরকারের সব রকমের আয়-ব্যয় সমন্বয়
করার জন্যই এই সংশোধনী। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব বেতন কাঠামোসহ সংশ্লিষ্ট আর্থিক বিষয়গুলোও অর্থ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে।
সভায় গ্যাসের পাইপলাইনের চলমান কাজ দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, অনেক জায়গায় গ্যাসের পাইপলাইনের কাজ চলছে। এসব কাজ দ্রুত শেষ করতে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পাইপলাইনগুলো আরও তাড়াতাড়ি শেষ করতে বলা হয়েছে, যাতে গ্যাস এবং ফুয়েল পাইপলাইনের মাধ্যমে দেয়া যায়। তাহলে সিস্টেম লস-সহ অন্যান্য লস যেমন ক্যারিং কস্ট, হ্যাজার্ড এগুলো কমে আসবে, কার্যকারিতা বাড়বে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অনেক জায়গায় পাইপলাইন বসানোর কাজ চলছে। এগুলো খুব দ্রুত কাজ করে সরবরাহ যেন পাইপলাইনের মাধ্যমে যথাসম্ভব বিশেষ করে প্রধান সরবরাহগুলো যেন আনা হয়। কারণ সব জায়গায় পাইপলাইন দেয়া সম্ভব হবে না। ঢাকা থেকে পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস যাচ্ছে সব জায়গায়। এটার খরচ তো স্বাভাবিকভাবেই কম। এজন্যই পাইপলাইন খুব দ্রুত করার জন্য বলা হয়েছে।