সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে হ্যাকার

Antivirus and firewall concept

 

হ্যাকিংয়ের শিকার হলে ধস নামতে পারে প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা, ব্র্যান্ড ভ্যালু, আভিজাত্য ও ভোক্তাবিশ্বাসে। এ সমস্যা থেকে প্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষিত রাখতে কী করা উচিত, টেক ওয়ার্ল্ড অবলম্বনে তা জানাচ্ছেন হাসান আদিল

২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বৃহৎ প্রতিষ্ঠান সাইবার সন্ত্রাসের লক্ষ্যবস্তু ছিল। এ থেকে রক্ষা পেতে খরচ হয় প্রায় চার দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ইউরো। এত খরচের পরও সেখানে হ্যাকিং থামেনি। সুতরাং সাইবার নিরাপত্তায় বিনিয়োগ করা ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় নেই বললেই চলে।

বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক সাইবার নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে প্রথমে আপনাকে বুঝতে হবে,

হ্যাকাররা মূলত কী কাজ করে। তখন প্রশ্ন হতে পারে, ‘আপনিও কেন প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় জনবল

বাড়াচ্ছেন না?’ হ্যাকিং থেকে রক্ষা পেতে একজন বিশ্বস্ত হ্যাকার নিয়োগ হতে পারে ২০১৭ সালের সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত।

হ্যাকারকে হারাতে পারে হ্যাকার

বিশ্বজুড়ে সাইবার ক্রিমিনালদের হুমকি দিন দিন বেড়েই চলেছে। অভিযোগ রয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলও নাকি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বদলে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য সব হ্যাকার যে আপনার প্রতিষ্ঠান-ব্যবসা, নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেবে, তা নয়। অনেক ভালো হ্যাকারও আছে। যারা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তাই অভিজ্ঞ হ্যাকার নিয়োগ দিতে পারেন। এমন হ্যাকাররা হোয়াইট হ্যাট বা এথিক্যাল হ্যাকার নামে পরিচিত। তারা কম্পিউটার সিস্টেম ও নেটওয়ার্কের দুর্বলতা খুঁজে বের করতে সক্ষম। এথিক্যাল

হ্যাকাররা নিরাপত্তাজনিত ত্রুটির সমাধানও করতে পারে।

যে কারণে হ্যাকার নিয়োগ দেবেন

স্কাইপোর্ট সিস্টেমসের সিইও আর্ট গিলিল্যান্ডের মতে, ‘অনেক কোম্পানি একসঙ্গে কিছু প্রযুক্তিপণ্য ক্রয় করে। একই সঙ্গে তারা মনে করে এগুলো নিরাপদ। কিন্তু অধিকাংশ সময়ে নানা স্তরের নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কে তারা সতর্ক থাকে না।’

তাই প্রযুক্তিগত সমস্যা খুঁজে বের করার জন্য এথিক্যাল হ্যাকার নিয়োগ দিতে পারে প্রতিষ্ঠানগুলো। কম্পিউটার সিস্টেমের দুর্বলতা খুঁজতে পরীক্ষামূলক নিরাপদ সাইবার আক্রমণ পরিচালনা করা যেতে পারে। বিশ্বস্ত হ্যাকারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের স্পর্শকাতর তথ্য নিরাপদ রাখতে পারবেন। তার কাজই হবে আপনার সিস্টেমের ত্রুটি খুঁজে বের করা। এ প্রক্রিয়ায় আপনি সহজে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারবেন। বিশ্বস্ত হ্যাকার ও ক্ষতিকর হ্যাকার উভয়ে একই টুলস ও টেকনিক ব্যবহার করে থাকে। আসলে উভয়ের মধ্যে নৈতিকতা ছাড়া বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। তাই একজন এথিক্যাল হ্যাকার নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে আপনি যদি খুঁতগুলো খুঁজে বের করতে পারেন, তাহলে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা যাবে। অন্যথায় যে কোনো সময় হ্যাকিংয়ের শিকার হতে পারে আপনার প্রতিষ্ঠান।

যেভাবে নিয়োগ দেবেন বিশ্বস্ত হ্যাকার

সাধারণ একজন হ্যাকারকে বেছে নিতে পারেন। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো সদস্যকে হ্যাকিংয়ের আদ্যোপান্ত শেখাতে পারেন। একজন এথিক্যাল হ্যাকারকে নিয়োগ দেওয়া মানে এই নয় যে, তাকে মুখোশের আড়ালে রেখে বিটকয়েনের মতো বিনিময়মূলক কিছু তৈরি করবেন। তাছাড়া বর্তমানে যোগ্য অনেক পেশাদার নিরাপত্তা বিশ্লেষক রয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য একজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করতে পারেন।

সেক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ‘প্রকৃতপক্ষে আপনি হ্যাকারের কাছ থেকে কী কী কাজ আশা করছেন?’ এক্ষেত্রে একটি স্পষ্ট খতিয়ান তৈরি করুন। সেখানে তার দায়িত্ব উল্লেখ করুন। তাকে শুধু প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা সিস্টেম পরীক্ষার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়নি বা হচ্ছে না। সে আপনার প্রতিষ্ঠানে সাইবার নিরপত্তার সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব নিতে সক্ষম। কেননা তারা সম্পূর্ণ পেশাদার ও প্রযুক্তি নিরাপত্তায় বিশেষজ্ঞ। এছাড়া এথিক্যাল হ্যাকার নিয়োগে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী কর্মীকে প্রতিষ্ঠানের সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন।

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০