Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 3:58 pm

সাক্ষ্যে গরমিল থাকায় ফাঁসি-যাবজ্জীবনের ৭ আসামি খালাস

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক যুগ আগে পিরোজপুরে একটি হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন পাওয়া সাত আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছেন উচ্চ আদালত। বিচারিক আদালত এ মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। সেই ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের আবেদন) খারিজ এবং আসামিদের আপিল গ্রহণ করে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ রায় দেন।

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফজলুল হক খান ফরিদ, শেখ আলী আহমেদ খোকন ও মো. আব্দুর রাজ্জাক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।

আইনজীবী ফজলুল হক খান ফরিদ পরে সাংবাদিকদের জানান, মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্যে গরমিল থাকা এবং বিশ্বাসযোগ্য না হওয়ায় হাইকোর্ট আসামিদের খালাস দিয়েছেন। সাক্ষ্যে কী ধরনের গরমিল ছিলÑজানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালে যখন হত্যাকাণ্ড ঘটে, তখন এ মামলার দুই আসামি দুলাল শিকদার ও বাদল শিকদার অন্য এক মামলায় কারাগারে ছিলেন। অথচ সাক্ষীরা বলেছেন, এ দুই আসামি রামদা দিয়ে কুপিয়েছিল। এতে বোঝা যায় তাদের সাক্ষ্য বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। এরকম কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে উচ্চ আদালত সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন।’

জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে ১৯৯৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাতে পিরোজপুরের ভিটাবাড়িয়া গ্রামের জালাল সরদারের ছেলে বাদল সরদারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন। আসামিপক্ষের এক আবেদনে ২০০৩ সালে উচ্চ আদালতের আদেশে মামলাটি পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। বিচার শেষে ২০১৫ সালের ১ জুলাই ঝালকাঠির জেলা ও দায়রা জজ এসএম সোলায়মান রায় দেন।

রায়ে ভাণ্ডারিয়া উপজেলার উত্তর ভিটাবাড়িয়া গ্রামের শহীদ শিকদার, দুলাল শিকদার, বাদল শিকদার ও নিজাম শিকদারকে মৃত্যুদণ্ড এবং ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সালাম সরদার, উত্তর ভিটাবাড়িয়া গ্রামের হারুন শিকদার ও মিনু সিকদারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

জজ আদালতের সেই রায়ে অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে ছয়জনকে খালাস দেয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। আর জজ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরাও আপিল করেন। শুনানি শেষে ডেথ রেফারেন্স খারিজ ও আসামিদের আপিল গ্রহণ করে রায় দিলেন হাইকোর্ট।