সাগরে গভীর নিম্নচাপ ৪ নম্বর সংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি গভীর নি¤œচাপে পরিণত হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর হুশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি চলছে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির এই প্রবণতা আগামী দুই দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি বুধবার রাতেই সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেটি আরও ঘনীভূত হয়ে প্রথমে নিম্নচাপ এবং দুপুরের পর গভীর নিম্নচাপের রূপ পায়।

বেলা ৩টায় গভীর নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা থেকে ৫০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

তখন নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। নি¤œচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে ক্রমেই উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে।

এ গভীর নি¤œচাপ শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে রূপ পাবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস। তবে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর বলছে, ওই বায়ুচক্রটি গভীর নিম্নচাপ আকারেই শুক্রবার সকালে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় সুন্দরবনের ওপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে এখন ৪ নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সতর্ক বার্তা দেব।’ উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি এসে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার এবং গভীর সাগরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এছাড়া ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুশিয়ারি সংকেত এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

লঘুচাপের প্রভাবে বুধবার থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার বৃষ্টির প্রবণতা আরও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় দেশের সর্বোচ্চ ২০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ঢাকায় ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নিম্নচাপের প্রভাবে রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি অথবা বজ সহ বৃষ্টি এবং দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।

বৃষ্টির এই প্রবণতা আগামী দুই দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কিছুটা কমে আসতে পারে। বৃহস্পতিবার সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০