নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে, যা ঘনীভূত হয়ে ক্রমান্বয়ে নিন্মচাপ, গভীর নিন্মচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পেতে পারে। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বৃহস্পতিবার বলেন, সাগরের ওই এলাকায় সকালে লঘুচাপটি সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে সাবধানতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বজলুর রশিদ বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিন্মচাপে রূপ নিতে পারে। তারপর এর অবস্থান ও গতি উল্লেখ করে সতর্কবার্তা জানানো হবে। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে উপকূলের কাছাকাছি দূরত্ব পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। এর আগে চলতি মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসেও আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছিল, অক্টোবরে একটি থেকে দুটি লঘুচাপ হতে পারে, যার একটি রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে।
কানাডাপ্রবাসী একজন বাংলাদেশি গবেষক সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম বা জিএফএসের পূর্বাভাস মডেলের ভিত্তিতে বঙ্গোপসাগরে একটি সুপার সাইক্লোন তৈরি হওয়ার সম্ভাবনার খবর দেন ফেসবুকে। বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দেয়।
অবশ্য পরে জিএফএসসহ অন্যান্য পূর্বাভাস মডেলে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের শক্তির মাত্রা কমিয়ে আনা হয়। ভারতীয় আবহাওয়াবিদরাও জানান, ২০ অক্টোবরের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ‘সাইক্লোনিক সার্কুলেশন’ গঠনের ইঙ্গিত তারা পেয়েছেন, তবে সেটা সুপার সাইক্লোন হওয়ার সম্ভাবনা কম।
১১ অক্টোবর জিএফএসের পূর্বাভাস মডেলে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিমুখ দেখানো হয়েছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা রাজ্যের দিকে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুরে সেটা দেখানো হচ্ছে বাংলাদেশের বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় এলাকার দিকে। অবশ্য পরিস্থিতি অনুযায়ী এই গতিপথও বদলে যেতে পারে।
নি¤œচাপ বা ঘূর্ণিঝড় যে আকারেই ওই ঘূর্ণিবায়ুর চক্র উপকূলে আসুক, তার প্রভাবে বৃষ্টি হবে। আর ২৪ অক্টোবর রাতের অমাবস্যা তিথির যোগ পেলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা হবে তুলনামূলকভাবে বেশি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান এরই মধ্যে বলেছেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সরকার সতর্ক আছে। সিদ্ধান্ত এলে প্রস্তুতির বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে।