সাড়ে তিন হাজার ছাত্রীর যাতায়াতে মাত্র একটি বাস!

কামরুল হাসান নিরব, ফেনী: ফেনীতে সরকারি জিয়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য ১৯৯৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদার জিয়া একটি গাড়ি উপহার দিয়েছিলেন। এরপর থেকে আর কোনো গাড়ি সংযুক্ত হয়নি। কিন্তু শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতি বছর। এ কারণে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ছাত্রীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলায় নারীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য ১৯৮০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ‘শিক্ষা, সাম্য মৈত্রী’ সেøাগান নিয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিজ নামে ফেনী শহরের রাজাঝির দীঘির পূর্বপাড়ে পাবলিক লাইব্রেরির দোতলায় মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২ একর ৪৫ শতাংশ ভূমির ওপর স্থানান্তর হয়। ১৯৮৬ সালে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয়করণের ঘোষণা দেন এবং পরের বছর কলেজটি সরকারি হয়।

কলেজ সূত্র জানা যায়, মাত্র আটজন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু হয় কলেজটি। এখন এ কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ৩টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও ২টি বিষয়ে স্নাতকোত্তরসহ বিভিন্ন কোর্সে সাড়ে তিন হাজার ছাত্রী রয়েছেন। এর মধ্যে ১২০ জনের আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। বাকিরা শহর কিংবা গ্রামের বাড়ি থেকেই যাতায়াত করেন।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি বাস উপহার দেন। ১৯৯৫ সালে কেনা বাসটিতে আসন সংখ্যা ৫২টি। সকাল ৮টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিসিক রাস্তার মাথা থেকে শুরু হয়ে শহর ও শহরতলির ২৭টি স্পটে সদর হাসপাতাল মোড় আর লালপোল পর্যন্ত চলাচল করে। প্রতিদিন সকালে এনে আবার বিকালে তাদের নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দেয়।

কলেজছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কলেজ থেকে ছাত্রীদের বাড়ির অবস্থান দূরে হওয়ায় প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা ভাড়া গুনতে হয় তাদের। এছাড়া অনেকেই ছাত্রীবাসে জায়গা না হওয়ায় সদর

উপজেলার বাইরে দূরদূরান্ত থেকে আসতে হয়, এতে করে তাদের এক প্রকার ভোগান্তি ও বাড়তি চাপ পোহাতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কলেজটি পর্যবেক্ষণে আসেন। তখন তিনি কলেজের ছাত্রীদের ভোগান্তির কথা শুনে একটি বাস উপহার দেবেন বলে ঘোষণা দেন।

কলেজের পরিবহন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কামাল হোসেন মজুমদার বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কলেজের বিভিন্ন সময় বাস ক্রয়বাবদ যে ফি নেয়া হয়, তা দিয়ে আরেকটি পরিবহন ক্রয় করা সম্ভব নয়। কলেজ ছাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে অন্তত চারটি বাসের প্রয়োজন। বর্তমানে যে বাসটি রয়েছে তা অকেজো ও যন্ত্রাংশ পুরনো হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুনাহার বলেন, দিন দিন ছাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে এ বাসটি দিয়ে যাতায়াত কঠিন। এ বিষয়ে শিগগিরই ফেনীর স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর সঙ্গে কথা বলে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সমীপে নতুন বাসের জন্য আবেদন করা হবে।

এ বিষয়ে ফেনী-২ আসনের সংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, বিষয়টি আমি নিজে পর্যবেক্ষণ করছি। এ বিষয়ে এর আগেও আমাকে জানানো হয়েছে। শিগগিরই একটা নতুন বাসের ব্যবস্থা করব। আশা করি ছাত্রীদের এ কষ্ট লাঘব হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০