প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় করোনা প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রশাসন অভিযান অব্যাহত রেখেছে। শুক্রবার (১০ এপ্রিল) জেলার প্রতিটি উপজেলায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক অভিযান পরিচালনা করা হয়।
প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং সহকারী কমিশনারদের নেতৃত্ব মানুষকে নিজ বাড়িতে থাকতে মাইকে সচেতনতামূলক নির্দেশনা দেয়া হয়। শতভাগ হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান ছাড়া অন্যসব দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সাতটি উপজেলায় সেনাবাহিনীর ৭টি টিমসহ জেলা সদরে পুলিশ এবং আনসারের সমন্বয়ে ৪টি টিম নিয়ে জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটগণ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। তথ্য অধিদপ্তরের একটিসহ মোট ৩টি সচেতনতামূলক ঘোষণা (মাইকিং) অব্যাহত রয়েছে। সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্যে অনুরোধ করা হচ্ছে।
বলা হচ্ছে, আপনি ঘরে থাকলে ভালো থাকবে আপনার পরিবার, ভালো থাকবে জাতি, ভালো থাকবে দেশ। দেশের কয়েকটি জেলায় করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ায় ঐ সকল জেলাতে কর্মরত লোকজন নিজ নিজ জেলায় ফিরতে চেষ্টা করছে। এর প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা জেলাতে সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ২ হাজারের মত মানুষ অন্য জেলা থেকে এসেছে। এর মধ্যে নারায়নগঞ্জ থেকে আগত ৮ জনকে দেবহাটা উপজেলায় বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলায় ২৫০ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে এবং ৫৫০ জনকে বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ১০০ জনকে বড়দল ইউনিয়নে আজ সকালে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। শ্যামনগর উপজেলায় ৩০০ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে, ১৫০০ জনকে বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। এখনও যারা কোয়ারেন্টিনের বাহিরে আছে তাদেরকে চেকপোস্ট বসিয়ে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
জেলাকে করোনা ঝুঁকি মুক্ত রাখতে সাতক্ষীরা জেলার সাথে পার্শ্ববর্তী জেলার সব সীমান্ত এবং আন্তঃউপজেলা সীমান্তে জরুরী সেবা ব্যতীত (যেমনঃ রোগীবাহী গাড়ি, ঔষধ পণ্যবাহী গাড়ি ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মালামালবাহী গাড়ি) সব প্রকার যানবাহন ও জনচলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে। অমান্যকারীর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাতক্ষীরা শহরে এবং প্রতিটি উপজেলায় রাস্তায় রাস্তায় জীবাণু নাশক স্প্রে করা হচ্ছে।
মেশিনের মাধ্যমে রাস্তায় পানি ছিটানো ব্যাহত আছে। জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ১০০০ লিটারের ২টি পানির ট্যাংকের মাধ্যমে প্রতিদিন জীবানুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। গত ৬ এপ্রিল,২০২০ তারিখে ভারত থেকে থেকে আসার জন্য ১৩ জনকে সাতক্ষীরা যুব ভবনে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে এবং ২ জনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে আইসোলেসনে রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। তারা সবাই সুস্থ্য আছেন। তাদের থাকা, খাওয়সহ সব বিষয়ে জেলা প্রশাসক নিজে তদারকি করছেন। সাতক্ষীরা থেকে করোনা টেস্টের জন্য এ পর্যন্ত ১২০ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। ৮ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। আশার কথা হলো সবাই করোনা নেগেটিভ।