প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা : শিশিরভেজা ভোর আর শরতের কাশফুল জানান দিচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয়া দুর্গাপুজার আগমনী বার্তা। দুর্গাপুজার প্রধান অনুষঙ্গ হলো দেবীদুর্গার প্রতিমা। উৎসব সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। ১ অক্টোবর শনিবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দূর্গাপূজা। এ উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলার সাতটি উপজেলার ৫৯৯ টি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা কারিগররা। ঢাক ও কাসির বাজনা ছাড়াও মায়েদের কপাল সিন্দুরে রাঙানোর মধ্য দিয়ে ৫ অক্টোবর বুধবার বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয়া দূর্গাপূজা।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ৫৯৯ টি মন্ডপে উদযাপিত হচ্ছে দূর্গাপুজা। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ১০৭টি, তালায় ১৯৬টি, কলারোয়ায় ৪৬, আশাশুনিতে ১০৮ টি, শ্যামনগরে ৬৯ টি, কালিগঞ্জে ৫২ টি ও দেবহাটায় ২১টি দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে কয়েক স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।এছাড়াও সরকারি ভাবে প্রতিটি এলাকায় গঠন করা হয়েছে সামাজিক সম্প্রতি রক্ষা কমিটি।
জেলার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে ঘুরে দেখা গেছে শিল্পীরা মাটির কাজ শেষে প্রতিমায় রঙ দেওয়ার আগে প্রতিমা শুকিয়ে নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। আবার কোথাও রংতুলির ছোঁয়ায় দেবীকে রাঙিয়ে তুলতে ব্যস্ত শিল্পীরা। এবার দেবী দুর্গার আগমন ঘটবে গজে । শাস্ত্রে বলা হয়েছে, দেবী দুর্গার গজে আগমনের ফলে চারিদিকে শস্যের উৎপাদন বাড়ে । সুখ, সমৃদ্ধি হয় । অন্যদিকে, এবার দেবীর গমন হবে নৌকায় । যার ফল খুব একটা শুভ নয়। বন্যার আশঙ্কা থাকে ।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে শরৎকালের মাঝামাঝি সময় হলেও শিশিরের কোন দেখা নেই। সেই সাথে শীতের আবহাওয়ার ও দেখা নেই। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে গরম। আবার সেই সাথে কখনো নেমে আসছে বৃষ্টি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ জানান, যথাযোগ্য উৎসাহ ও আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে এবারের শারদীয় দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। মহামায়ার আগমনে বিনাশ হবে অশুভ শক্তি।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান শেয়ার বিজ কে জানান, সাতক্ষীরা জেলায় ৫৯৯ টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ। সুষ্ঠ, সুন্দর ও নির্বিঘ্ন ভাবে পূজা সম্পন্ন করতে পুলিশের পাশাপাশি কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সাদা পোশাকে মাঠে থাকবে আইনশৃংখলা বাহিনী। এ পূজাকে ঘিরে যাতে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হতে পারে সেজন্য প্রতিটি পূজামণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে দুর্গাপূজা পালন করবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।