Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 10:18 pm

সাতক্ষীরা আশাশুনি সড়ক বেহাল

ফারুক রহমান, সাতক্ষীরা: সড়ক বিভাগের গাফিলতিতে জেলার সাতক্ষীরা-আশাশুনি এবং আশাশুনি থেকে কোলাঘোলা সড়কটির বেহাল দশায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। অসহায় হয়ে পড়েছে সড়ক দুটি দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। রাস্তায় বড় বড় খাদের সৃষ্টি ও খোয়া উঠে ছড়িয়ে থাকায় সড়কটিতে চলাচল খুবই বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানি জমে সড়কের ওপর বড় বড় গর্ত আর জলাশয়ের মতো চিত্রও বিরাজ করছে।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন অবহেলার কারণে সড়কটি এলাকাবাসীর জন্য অভিশাপ হিসেবে দেখা দিয়েছিল। অনেক দেনদরবরার ও প্রচেষ্টার ফসল হিসাবে অবহেলিত সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রায় ৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ২০১৯ সালে সড়কের কাজ শুরু করা হয় এবং কাজ দ্রুত গতিতেই চলছিল। করোনার প্রাদুর্ভাবে সংস্কারকাজ মাঝপথে এসে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।

গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানবাহন চলাচল ও বৃষ্টির পানিতে সড়কের পাথর ও বালি উঠে সড়কের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ। এতে পানি জমে সড়কটিকে করে তুলেছে বিপজ্জনক। চাকার ধাক্কায় সড়কের খাদের পানি ছিটকে অন্য যানবাহন, পথচারী ও দোকানপাট কর্দমাক্ত পানিতে প্রতিনিয়ত একাকার হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সড়কটি আগের চেয়েও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

মহেশ্বরকাটি মাছের শেডের মাছ ব্যবসায়ী আবিদুর রহমান, কবিরুল ইসলাম, রমেশ চন্দ্র সরকার ও হরিপদ দাশ জানান, দীর্ঘদিন সড়ক জরাজীর্ণ থাকায় জনদুর্ভোগের পাশাপাশি তাদের ব্যবসায়ের ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে। মাছ নিয়ে খুলনায় বিক্রির উদ্দেশ্যে রওনা হলে আশাশুনি থেকে সাতক্ষীরায় পৌঁছাতে সময় লাগবে ৩০-৪০ মিনিট। সেখানে সড়কের বেহাল দশার জন্য সাতক্ষীরা পৌঁছাতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। যার ফলে বরফ গলে গিয়ে কোটি কোটি টাকার মাছ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

আশাশুনি উপজেলার কোলা এলাকার কামরুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ অসুস্থ হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা শহরে যেতে হয়। সড়কের বেহাল দশা ও বন্যার পানিতে বেশ কিছু জায়গায় ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। এর ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাক্তারের কাছে পৌছাতে না পারায় অনেক প্রাণহানিও ঘটছে।

আশাশুনির বুধহাটা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, সড়কের গর্তে বর্ষার পানি জমে থাকায় গাড়ির চাকার ধাক্কায় ময়লা পানিতে তাদের দোকান ও ক্রেতাদের পোশাক নোংরা হয়ে যাচ্ছে এবং পণ্য আনা-নেওয়ার সময় অনেক পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সড়কে চলাচলকারী একাধিক মিনিবাস চালক বলেন, সড়কের মধ্যে অসংখ্য খানাখন্দের সঙ্গে যুদ্ধ করে ঝুঁকি নিয়ে তাদের যানবাহন চালাতে হয়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো যানবাহন বিকল হয়ে সড়কের মধ্যে পড়ে থাকে। সড়কের মধ্যে যানবাহন বিকল হওয়ায় ভোগান্তি বেড়ে যায় সাধারণ যাত্রীদের।

সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দীন বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মালামাল সংগ্রহ করতে পারেনি। বর্তমান পরিস্থিতে তারা পণ্য সংগ্রহ করছে। আগামী আট-দশ দিনের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।