সাত হাজার হজযাত্রীর বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত দেয়নি এজেন্টরা

হামিদুর রহমান: হজ ফ্লাইট শুরু হলেও এখনও প্রায় সাত হাজার হজযাত্রীর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেনি হজ এজেন্সিগুলো। ধর্ম মন্ত্রণালয় দ্রুত সময়ে এজেন্সিগুলোকে টিকিট সংগ্রহ করতে বললেও টিকিট সংগ্রহ না করে রিপ্লেসমেন্ট বাড়ানোর দাবি করছে এজেন্সিগুলো। তবে কেউ হজে যেতে না পারলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে হুশিয়ারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, হজ এজেন্সিগুলো চার শতাংশের পরিবর্তে আগের ন্যায় ১৫ শতাংশ রিপ্লেসমেন্টের দাবি করে আসছে। এ অজুহাতে হজ এজেন্সিগুলো হজে গমণেচ্ছুদের জন্য উড়োজাহাজের টিকিট সংগ্রহ নিশ্চিত করছে না। ফলে হজ ব্যবস্থাপনায় শেষ মুহূর্তে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত যুগ্ম সচিব মো. হাফিজ উদ্দিন শেয়ার বিজকে বলেন, এ বছর হজযাত্রীদের ভোগান্তি কমাতেই আমরা আগে থেকেই হজ এজেন্সিগুলোকে টিকিট সংগ্রহ করতে বলেছি। যদি কোনো হজযাত্রী হজ পালন করতে না পারেন, তাহলে সব দায়-দায়িত্ব হজ এজেন্সিগুলোকেই নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, হজ এজেন্সিগুলোর হাত থেকে হজযাত্রীদের নিরাপদ করতেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা বাড়ানোর সুযোগ নেই। হজ নীতিমালা অনুসারে শুধু মৃত্যু ও গুরুতর অসুস্থতাজনিত কারণ ছাড়া অতিরিক্ত রিপ্লেসমেন্ট করার সুযোগ নেই।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, শুধু অসুস্থতা ও মৃত্যুজনিত কারণে এজেন্সিপ্রতি মোট হাজির চার শতাংশ রিপ্লেসমেন্ট দেওয়ার নিয়ম থাকলেও এজেন্সিগুলো সেই কোটা পূর্ণ করে তা আরও বাড়িয়ে নিতে চায়। অন্যের পাসপোর্ট ও আইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে রাখা অনেক হজযাত্রীকে এজেন্সিগুলো সে স্থলে নতুন হজযাত্রীর রিপ্লেস চায়, যা হজ নীতিতে বন্ধ করা হয়েছে। ফলে এ ধরনের জটিলতা তৈরি হয়েছে। রিপ্লেসমেন্টের পরিমাণ না বাড়ানো পর্যন্ত এজেন্সিগুলো টিকিট কাটছে না। ফলে বেশকিছু ফ্লাইট বাতিল ও হজযাত্রী না যেতে পারার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রাপ্ত তথ্যমতে, এ পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার হজযাত্রীর টিকিট সংগ্রহ বাকি রয়েছে। এ বিষয়ে গত সোমবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনিছুর রহমান ৫৬ এজেন্সি মালিককে ডেকে দেন-দরবার করলেও টিকিট সংগ্রহ করছে না হজ এজেন্সিগুলো।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব এম শাহাদাত হুসাইন তাসলিম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘সরকার হজে যেতে আগ্রহীদের মোট সংখ্যার মাত্র চার শতাংশ রিপ্লেসমেন্টের সুযোগ দিয়েছে। এটি খুবই সামান্য। মৃত্যু ও গুরুতর অসুস্থতা ছাড়াও অনেক হজযাত্রী রেজিস্ট্রেশন করেও হজে যেতে চান না। তাদের বিষয়ে আমরা রিপ্লেসমেন্টের সুযোগ পাচ্ছি না। এজন্য হজ এজেন্সিগুলো দাবি করেছে এটা বাড়ানোর জন্য।’
তিনি আরও বলেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারের হজযাত্রীরা শান্তিপূর্ণভাবে হজ পালনে যাচ্ছেন। কিছু টিকিট অবিক্রীত রয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই এজেন্সিগুলো টিকিট সংগ্রহ করবে। তবে রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে এজেন্সিগুলোর কিছু সমস্যা রয়েছে। এজেন্সিগুলো চাচ্ছে রিপ্লেসমেন্ট চার শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার জন্য। এটি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। এটি কোনো জটিল সমস্যা নয়। আশা করছি, খুব দ্রুত সময়েই মধ্যেই সমস্যাগুলো সমাধান হবে।
উল্লেখ্য, এর হজ এজেন্সিগুলোকে সতর্ক করে গত ২১ জুন ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ জারি করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হজ এজেন্সিগুলোর গাফিলতির কারণে কোনো হজযাত্রী এবার হজে যেতে ব্যর্থ হলে তাদেরই এর দায় বহন করতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০