নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাগলকাণ্ডে আলোচিত সাদিক অ্যাগ্রোর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আমদানি নিষিদ্ধ জাতের গরু নিয়ে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে তা কোটি টাকা দাম হাঁকিয়ে বিক্রির বিষয়ে গতকাল সোমবার দুদকের একটি দল সাভারের কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে অভিযান চালায়।
এ খামার থেকেই আলোচিত সাদিক অ্যাগ্রোয় নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের গরু নিলামের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়েছিল।
গতকাল সোমবার দিকে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ৯ সদস্যের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে প্রবেশ করে। এই দলের নেতৃত্ব দেন দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
অভিযোগ রয়েছে, কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে জব্দ থাকা কয়েকটি ব্রাহমা জাতের গরু নিলামে কিনে নেন সাদিক অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী মো. ইমরান হোসেন। গরুগুলো জবাই করে সুলভ মূল্যে মাংস বিক্রি করার শর্তে নিলামে বিক্রি করা হয়েছিল। তবে ইমরান সুলভ মূল্যে বিক্রি না করেই গরুগুলো তার খামারে রেখে দেন। এরপর এসব গরুর কোটি টাকা দাম হাঁকিয়ে বাজারে তোলেন ইমরান।
দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০২১ সালে জুনের দিকে আমেরিকা থেকে ১৮টি ব্রাহমা গরু অবৈধভাবে আমদানি করা হয়। পরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গরুগুলো আটক করে মামলা করে। গরুগুলো বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে হস্তান্তর করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। পরে গরুগুলো জবাই করে সুলভ মূল্যে মাংস বিক্রি করার শর্তে ইমরানকে দেয়া হয়েছিল। আমরা কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে এসেছি তাদের কাছ থকে কাগজপত্র সংগ্রহ করার জন্য। এরপর সাদিক অ্যাগ্রোতে গিয়ে কাগজগুলো আমরা মিলিয়ে দেখব।’
কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার থেকে বেরিয়ে সাভারের ভাকুর্তা এলাকায় অবস্থিত সাদিক অ্যাগ্রোর উদ্দেশে যায় দুদকের দলটি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর কোরবানির জন্য এই সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনতে গিয়েছিলেন এনবিআরের সদস্য মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তুমুল আলোচনা হয়। এরপর মতিউর রহমান ও তার পরিবারের বিপুল সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসে। মতিউরকে এরই মধ্যে এনবিআর থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুদক।
এরপর খাল উদ্ধারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উচ্ছেদ অভিযানে ঢাকার মোহাম্মদপুরে সাদিক অ্যাগ্রোর খামারটি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। এ খামারের গরু-ছাগল সরিয়ে নেয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সাভারের খামারে।
