সাধারণ মানুষের জন্য বাজেট হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সাধারণ মানুষের জন্য হয়নি। বাজেট প্রতিটি সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল, যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সবাইকে প্রভাবিত করে। কিন্তু ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সমতাভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের সহায়ক নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজ। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত বাজেট ২০১৮-১৯: নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এসব মন্তব্য করেন।
অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাধারণ মানুষ মনে করে এটি বড় বাজেট। কিন্তু তারা তো সবকিছু বোঝে না। সাধারণ মানুষের জন্য এ বাজেট হয়নি। অল্প কিছু শ্রেণিকে তুষ্ট করার জন্য বাজেটটা হয়েছে। একটি বিশেষ শ্রেণির মানুষ এ থেকে বেশি সুবিধা পাবে। তাছাড়া বাজেটে অ্যানালাইটিক্যাল কোনো বর্ণনা নেই।
তিনি বলেন, আমাদের বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলোর প্রতি দৃষ্টি ও মনোযোগ এত বেশি যে, এতে মাঝারি বা ছোট প্রকল্পের আওতায় থাকা লোকগুলো কিন্তু সাফার হচ্ছে। মেগা প্রকল্পগুলো ভবিষ্যতে কাজে লাগবে, কিন্তু এসব চিন্তা করলে জনকল্যাণমুখী বাজেট এটাকে বলা যাবে না।
প্রকল্পে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বড় বড় প্রকল্প থেকে দুর্নীতি হচ্ছে। এখন কিন্তু দুর্নীতি ৫০০ বা হাজার টাকায় নয়, এখন দুর্নীতি হচ্ছে হাজার কোটি টাকায়। বাজেটে এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হবে ব্যাংক খাত ও সঞ্চয়পত্র থেকে। অথচ সরকার যখন এ খাতে চাপ দেয় তখন তা বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকারীদের ওপর গিয়ে পড়ে। ব্যাংক খাতে হলমার্ক, বিসমিল্লাহ কিংবা এসব বড় বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির বিচার না করায় ছোট আমানতকারীরাও আস্থাহীনতায় রয়েছে। ফলে ব্যাংক খাতও কঠিন সময় পার করছে।
তিনি আরও বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন করতে হলে সক্ষমতা দরকার। সেই সক্ষমতা তো এখনও আমাদের নেই। সরকারি, বেসরকারি ও রেগুলেটরিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি দরকার। কিন্তু তা হয়নি। এবারের বাজেটটা তাই আলাদাভাবে চমকের কোনো বাজেট নয়। আমরা ভেবেছিলাম উন্নয়নের বাজেট হবে এবং উন্নয়নটা হবে টেকসই। সেটা দেখছি না।
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা কুপতলা করে তুষ্ট করতে সব ধরনের কাজ করে যাচ্ছে। যে কারণে রাস্তা ঠিক রেখে যানজট নিরসন করার মতো কাজটিও সম্পন্ন হয় না। আর আমরাও প্রতিবাদ করি না। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কোনো সমন্বয় নেই, তাও আমরা মেনে নিচ্ছি। আর সরকার এ সুযোগেই বলছে দেশ উন্নত হয়েছে।
কলামিস্ট আলী ইমাম মজুমদার বলেন, গত ১১ মাসে ৬৩ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে। আর এক মাসে বাকিটা বাস্তবায়ন করা কি সম্ভব? অর্থাৎ বাস্তবায়নের হার খুবই নি¤œ। যে কারণে আমরা তুলনামূলকভাবে দরিদ্র হয়ে যাচ্ছি। কেননা ধনী ও গরিবের দূরত্ব অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের কৃষি খাতে ভর্তুকি বাড়ানো দরকার ছিল। সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০