সাপের ছোবলে আতঙ্কিত হবেন না

চলছে বর্ষাকাল। বৃষ্টি ও প্রচণ্ড গরমে সাপের উপদ্রব তুলনামূলক বেশি হয়। এ সময় সাপেকাটা রোগীর সংখ্যা বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে গ্রাম-গঞ্জ ও শহরের আশেপাশে সাপের আনাগোনা বেড়ে যায়।
ছোবলের স্থানে দাগ দেখে সাপটি বিষধর, না সাধারণ তা শনাক্ত করা সম্ভব। সব বিষধর সাপের সামনে দুটো বিষদাঁত থাকে, যা অন্য দাঁত থেকে বড় ও বাঁকানো। বিষধর সাপের ছোবলে আক্রান্ত স্থানে দুটো তীন্ন গভীর দাগ থাকে। তাহলে বুঝতে হবে সেটা বিষধর সাপের ছোবল। এ ধরনের সাপের ছোবল ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। বিষধর সাপের বিষের বিষাক্ত উপাদানগুলো স্নায়ুকোষকে আক্রমণ করে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া প্রতিহত করে মানুষের মৃত্যু ঘটাতে পারে। ছোবলের পর রোগীর কথা বলতে অসুবিধা হলে, চোখের পাতা ভারি হলে, মুখ হতে লালা ঝরলে কিংবা বমি হলে বুঝতে হবে এটি বিষধর সাপের ছোবল। যদি ছোট ছোট ছোবলের এক সারি দাগ থাকে, তবে বুঝতে হবে সে সাপটি বিষধর নয়।

এ সময় করণীয়

ছোবলের স্থানটি পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুতে হবে

সাপ হাতে বা পায়ে ছোবল দিলে বাঁধন দিতে হবে। ছোবলের স্থানের কিছুটা ওপরে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলুন। বাঁধনটি যেন কনুই, কবজি বা গোড়ালি ও গলা বা মাথায় না হয় এবং খুব বেশি শক্ত না হয়। বাঁধনটি দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো রক্ত চলাচল বন্ধ রাখা। রোগীর নড়াচড়া সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে, যাতে বিষ তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে না পড়ে

রোগীকে শান্ত রাখতে হবে

কাপড় অথবা এমন কোনো জিনিস যেমন ঘড়ি, আংটি, ব্রেসলেট যা আক্রান্ত অঙ্গকে চেপে ধরে, তা খুলে ফেলতে হবে

সাপের ছোবলের স্থানে কোনো কাটাছেঁড়া করা যাবে না

রোগীকে কিছু খেতে বা পান করতে দেওয়া যাবে না বিশেষ করে অ্যালকোহল-জাতীয় কিছু

প্রাথমিক চিকিৎসার পর রোগীকে দ্রুত নিকটতম হাসপাতাল কিংবা স্থাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে

সাবধানতা

কাউকে সাপে কাটলে প্রথমেই তার মন থেকে ভয় তাড়ানোর চেষ্টা করুন। আক্রান্ত মানুষটিকে বেশি আতঙ্কিত হতে দেবেন না। এতে শরীরে অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। হ্যার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লাড লেভেল বেড়ে যেতে পারে।
বর্ষাকালে ঝোপঝাড় কিংবা জঙ্গলে সাবধানে হাঁটতে হবে। এ সময় কোনো অবস্থাতেই গর্তে হাত দেওয়া যাবে না। রাতের বেলায় পথ চলতে আলো (টর্চলাইট), লাঠি সঙ্গে রাখুন। বেশিরভাগ সাপই বিষধর নয়। তবে বিষধর সাপের ছোবলের আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে। তাই ঝাড়ফুঁক, তাবিজ বা কবিরাজি চিকিৎসা কিংবা ওঝার ওপর নির্ভর না করে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। সাপেকাটার ওষুধ ‘অ্যান্টিভেনাম’ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জেলা কিংবা উপজেলা হাসপাতালে পাওয়া যায়। দ্রুততার সঙ্গে হাসপাতালে নিন, বেঁচে যাবে রোগী।

ইন্টারনেট অবলম্বনে রিপন আহমেদ

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০