নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৪৬ লাখ ২৪ হাজার ৮৫৮টি শেয়ার ২৯ কোটি ৩৪ লাখ ১২ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের আট দশমিক ৬৫ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর চার দশমিক ৬৮ শতাংশ কমেছে।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ বা ৫০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ৬৩ টাকায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৬৩ টাকা ২০ পয়সা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৬২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৬৩ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়। দিনজুড়ে কোম্পানিটির ১০ লাখ ৩১ হাজার ২৭২টি শেয়ার মোট এক হাজার ৩১৬ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ছয় কোটি ৫০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারদর ৫২ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৮৬ টাকায় ওঠানামা করে।
২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে সাত টাকা ৪৮ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৭২ টাকা ৯৬ পয়সা।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল, যা তার আগের বছরের সমান। ২০১৮ সালে কোম্পানির ইপিএস হয়েছিল ছয় টাকা ২৫ পয়সা আর এনএভি দাঁড়িয়েছিল ৬৬ টাকা ৭৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে পাঁচ টাকা ৪৯ পয়সা ও ৬১ টাকা ৮২ পয়সা।
কোম্পানিটি ১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন হচ্ছে। এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৪০৫ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ দুই হাজার ২৬ কোটি ৫১ লাখ ৩১ হাজার টাকা।
কোম্পানিটির মোট ৪০ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার ৪৪৫টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ৩৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারী ৩৬ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৫ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাত আট দশমিক ৪৫ এবং হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে সাত দশমিক ৪২। আর লেনদেনের দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড। কোম্পানির শেয়ারদর চার টাকা ২০ পয়সা বেড়েছে। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির এক লাখ ৩৪ হাজার ৪৬০ শেয়ার ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।
‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৭৬ সালে। ২০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৫ কোটি ২১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৪৩১ কোটি ৪০ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরে ৩৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময় ইপিএস হয়েছে ৬৫ টাকা ৯৫ পয়সা এবং এনএভি ছিল ২৯৩ টাকা ৮৮ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করছে ১০০ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
কোম্পানির মোট এক কোটি ৫২ লাখ ১৮ হাজার ২৮০টি শেয়ারের মধ্যে ডিএসইর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৬০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে এবং প্রাতিষ্ঠানিক ২৯ দশমিক ২০ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বাকি ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটির ৪৬ লাখ চার হাজার ৩৫৩টি শেয়ার ৯ কোটি ২২ লাখ ৮১ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ৭২ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর চার দশমিক ৭৪ শতাংশ কমেছে।
তালিকায় চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে ছিল যথাক্রমে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড এবং রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ লিমিটেড। এর পরের অবস্থানে থাকা কোম্পানিগুলো হলো, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, এক্সিম ব্যাংক ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।