Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 5:14 am

সাপ্তাহিক লেনদেনের তিন শতাংশ খুলনা পাওয়ারের

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেনের দ্বিতীয় শীর্ষে উঠে আসে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির এক কোটি ২০ লাখ চার হাজার ৯৬২টি শেয়ার ৬৩ কোটি ৯৮ লাখ তিন হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ৮৮ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর দুই দশমিক ৯৬ শতাংশ বেড়েছে।

সর্বশেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর দুই দশমিক ৩৪ শতাংশ বা এক টাকা ২০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৫২ টাকা ৪০ পয়সায় হাতবদল হয়। শেয়ারটির সমাপনী দর দাঁড়িয়েছে ৫২ টাকা ১০ পয়সা। ওইদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৫১ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫৩ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়। আর গত এক বছরে শেয়ারটির দর ৩৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৬৮ টাকা ২০ পয়সায় ওঠানামা করে। 

এদিকে সম্প্রতি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ইউনাইটেড পায়রা পাওয়ারের ৩৫ শতাংশ সাধারণ শেয়ার অধিগ্রহণ করবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। গত ২১ আগস্ট ইউনাইটেড পায়রা পাওয়ার প্লান্টের উৎপাদিত বিদ্যুৎ কেনার জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছে। আর পটুয়াখালীতে অবস্থিত পায়রা পাওয়ার প্লান্টের ১৫০ মেঘাওয়াট ক্ষমতা-সম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২০২০ সালের ২১ নভেম্বর বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।

উল্লেখ্য, ‘এ’ ক্যাটেগরির খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির ৭০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৩৯৭ কোটি ৪১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৬০৪ কোটি ১৯ লাখ ১০ হাজার টাকা।

কোম্পানিটির মোট ৩৯ কোটি ৭৪ লাখ ১৩ হাজার ১৮০টি শেয়ার রয়েছে। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকের কাছে ৬৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে তিন টাকা ৫০ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ২০ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ছয় টাকা ২০ পয়সা।

আর লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে ছিল সিমেন্ট খাতের লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির তিন কোটি ২৩ লাখ ১৬ হাজার ৬৪৫টি শেয়ার ১৫৬ কোটি ৪৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের সাত দশমিক শূন্য চার শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর সাত দশমিক ৩৬ শতাংশ কমেছে।

এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের শেয়ারদর এক দশমিক ৫২ শতাংশ বা ৭০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৪৬ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৪৬ টাকা ৬০ পয়সা। দিনজুড়ে ৪৪ লাখ ২৩ হাজার ৫৫৭টি শেয়ার মোট তিন হাজার ৪৩ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ২০ কোটি ৭৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৪৬ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৪৭ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ৩০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৫১ টাকা ৩০ পয়সায় ওঠানামা করে।

২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯৬ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৪১ পয়সা। এর আগে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা তার আগের বছরের সমান। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটি ইপিএস করেছে ৬৯ পয়সা ও এনএভি ১৩ টাকা ১৫ পয়সা। এটি আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে এক টাকা ৯২ পয়সা ও ১৩ টাকা ২৪ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৮০ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, যা আগের বছর ছিল ২২২ কোটি ৬৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

২০০৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি। এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন এক হাজার ১৬১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ৩৯৬ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ১১৬ কোটি ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৫০০টি শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৬৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ১৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারী এক শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে বাকি ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিল সামিট পাওয়ার লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির এক কোটি ৪৩ লাখ ৬৪ হাজার ৩৭৪টি শেয়ার ৫৯ কোটি ৭৮ লাখ ৬০ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ৬৯ শতাংশ।

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্ধ বার্ষিকের (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০১৯) আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে ইপিএস হয়েছে দুই টাকা ৮৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল দুই টাকা ৫৪ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৩১ টাকা ১২ পয়সা। এর আগে ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে চার টাকা ৭৮ পয়সা, আর ২০১৯ সালের ৩০ জুন তারিখে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৩২ টাকা ৪০ পয়সা।