নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে কে অ্যান্ড কিউ (বাংলাদেশ) লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দুই লাখ ৭০ হাজার ৩৩৯টি শেয়ার ১৮৩ কোটি ১৯ লাখ ৭০ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের শেষদিনে কোম্পানিটির শেয়ারদর এক দশমিক ২১ শতাংশ বা দুই টাকা ৮০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ২৩৪ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার মোট মূল্য ছিল এক কোটি ৯৪ লাখ ১৬ হাজার টাকা। শেয়ারটির সমাপনী দর দাঁড়িয়েছে ২৩৪ টাকা ১০ পয়সায়। ওইদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনি¤œ ২৩০ টাকা ৬০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২৩৬ টাকা ৯০ পয়সায় হাত বদল হয়। আর গত এক বছরে শেয়ারটির দর ১৩৮ টাকা ১০ পয়সা থেকে ২৪৯ টাকায় ওঠানামা করে।
‘বি’ ক্যাটেগরির কে অ্যান্ড কিউ লিমিটেড ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন চার কোটি ৯০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৩২ কোটি ৬২ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
কোম্পানিটির মোট ৪৯ লাখ দুই হাজার ৫৩০টি শেয়ার রয়েছে। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকের কাছে ২৪ দশমিক ছয় শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক তিন দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং ৭২ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
লেনদেনে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিটির ২১ লাখ ৭৭ হাজার ৯০৯টি শেয়ার ৮৭ কোটি চার লাখ ৪৩ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ছয় দশমিক দুই শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর এক দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের শেষদিনে কোম্পানিটির শেয়ারদর এক দশমিক ৯৯ শতাংশ বা সাত টাকা ৯০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৪০৫ টাকায় হাতবদল হয়, যার মোট মূল্য ছিল ৩৭ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার টাকা। শেয়ারটির সমাপনী দর দাঁড়িয়েছে ৪০৩ টাকা ১০ পয়সায়। ওইদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৩৯৭ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪০৫ টাকায় হাত বদল হয়। আর গত এক বছরে শেয়ারটির দর ১৫৪ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৪২২ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠানামা করে।
২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য ৯০ শতাংশ নগদ ও ২০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময় ইপিএস হয়েছে ১১ টাকা ৫১ পয়সা এবং এনএভি ছিল ৪০ টাকা ৮০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ১১ টাকা ৫০ পয়সা ও ৪১ টাকা ২২ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৪৫৯ কোটি ৬৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
‘এ’ ক্যাটেগরির ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির ৮০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৪৭৯ কোটি আট লাখ ৭০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৯৪৫ কোটি ৩৯ লাখ ১০ হাজার টাকা।
কোম্পানিটির মোট ৪৭ কোটি ৯০ লাখ ৮৭ হাজার একটি শেয়ার রয়েছে। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকের কাছে ৯০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ছয় দশমিক ৩৭ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক আট শতাংশ এবং তিন দশমিক ৫৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
লেনদেনে শীর্ষ তিনে অবস্থান করে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিটির এক লাখ ৮৬ হাজার ৫৫১টি শেয়ার ৮৫ কোটি ২২ লাখ ৯১ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের পাঁচ দশমিক ৮৯ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর তিন দশমিক ৭৬ শতাংশ কমেছে।
সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির ৫৮ হাজার ৮৪৬টি শেয়ার মোট পাঁচ হাজার ৩২৭ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ২৬ কোটি ৪৯ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। ওইদিন শেয়ারদর এক দশমিক ৩০ শতাংশ বা ৫৮ টাকা ৯০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ চার হাজার ৪৭৫ টাকায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল চার হাজার ৪৮৩ টাকা ১০ পয়সা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ চার হাজার ৪৭৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ চার হাজার ৫৪৫ টাকায় ওঠানামা করে। এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর তিন হাজার ১৬০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকায় ওঠানামা করে।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের এ কোম্পানিটি ১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ৬০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৬০ কোটি টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ দুই হাজার ২৫১ কোটি ২৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। কোম্পানিটির ছয় কোটি শেয়ার রয়েছে। ডিএসই থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৭২ দশমিক ৯১ শতাংশ, সরকারি শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারী ১৬ দশমিক এক শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ শেয়ার।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ৩৮ লাখ ৬৩ হাজার ৬৯৩টি শেয়ার ৭৪ কোটি ৩২ লাখ ৩৬ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা ছিল মোট লেনদেনের পাঁচ দশমিক ১৪ শতাংশ। শেয়ারটির দর কমেছে ২৭ দশমিক ১৮ শতাংশ। পঞ্চম অবস্থানে থাকা মুন্নু সিরামিকের ১৭ লাখ ৫২ হাজার ৪৫৯টি শেয়ার ৬১ কোটি ৩৪ লাখ তিন হাজার টাকায় লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর ১২ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়েছে। ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা গ্রামীণফোনের ১৪ লাখ ২২ হাজার ৬৩১টি শেয়ার ৫৭ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় লেনদেন হয়।