নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ২১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৮১টি শেয়ার ৪১ কোটি ৫৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ৬৪ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর চার দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে।
সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে স্কয়ার ফার্মার শেয়ারদর শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ বা ১০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ১৯০ টাকায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ১৯০ টাকা। দিনজুড়ে চার লাখ ৯১ হাজার ৯৯৪টি শেয়ার মোট এক হাজার ৭১০ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৯ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ১৮৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১৯১ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ১৮৬ টাকা থেকে ২৭৭ টাকা ৩০ পয়সায় ওঠানামা করে।
২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি ৪২ শতাংশ নগদ ও সাত শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এছাড়া কোম্পানিটির ভবিষ্যৎতে ব্যবসার সম্প্রসারণের জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে বিএমআরই, ক্যাপিটাল মেশিনারিজ এবং জমির জন্য ২০০ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৬ টাকা তিন পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৮৬ টাকা তিন পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ১৫ টাকা ৭১ পয়সা।
চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০১৯) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। প্রাপ্ত তথ্যমতে, প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে চার টাকা ২৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল চার টাকা দুই পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস ২৩ পয়সা বেড়েছে। এছাড়া ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ৯০ টাকা, যা ২০১৯ সালের ৩০ জুনে ছিল ৮৬ টাকা তিন পয়সা। আর এ প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে চার টাকা ১৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল চার টাকা ছয় পয়সা।
১৯৯৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি। এক হাজার কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৭৮৯ কোটি ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ চার হাজার ৮২৯ কোটি ৫৩ লাখ ৯ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ৭৮ কোটি ৯০ লাখ আট হাজার ৪৬৬টি শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৩৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ১০ দশমিক ২৮ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীর ১৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে বাকি ৩৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
আর লেনদেনের দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৪৭ লাখ ৩৫ হাজার ১৪টি শেয়ার ৩৮ কোটি ৫২ লাখ ৩৮ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ৪৫ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর তিন দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর সাত দশমিক শূন্য সাত শতাংশ বা পাঁচ টাকা ৪০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৮১ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৭৯ টাকা ৬০ পয়সা। দিনজুড়ে চার লাখ ৭৬ হাজার ৩৩৯টি শেয়ার এক হাজার ২০৭ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর তিন কোটি ৬৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৭৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৮১ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ৪৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৮৭ টাকা ২০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।
কোম্পানির ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৯ কোটি ৯৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ২৩ কোটি ৮৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
বিবিধ খাতের এ কোম্পানিটি ১৯৯৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির মোট এক কোটি ৯৯ লাখ ৯৬ হাজার ৬০০টি শেয়ার রয়েছে। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে ৩০ দশমিক ৬১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ১২ দশমিক শূন্য আট শতাংশ ও বাকি ৫৭ দশমিক ৩১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ৪৬ দশমিক ৫৫ ও হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে ৫৫ দশমিক ২৮।
২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৭৩ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ৩৮ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৯ টাকা দুই পয়সা লোকসান। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য আগামী ৩০ জানুয়ারি বেলা ১১টায় মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার বড় বালুয়াকান্দিতে অবস্থিত কোম্পানির নিবন্ধিত কার্যালয়ে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা তার আগের বছরের সমান। আলোচিত সময়ে ইপিএস হয়েছে এক টাকা ৭১ পয়সা এবং এনএভি ২৬ টাকা ৯৩ পয়সা। এটি তার আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে এক টাকা ৫৯ পয়সা ও ২৬ টাকা ২৩ পয়সা। ২০১৮ সালে মোট মুনাফা করে তিন কোটি ৪১ লাখ ২০ হাজার টাকা, যা আগের বছর একই সময় ছিল তিন কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিল খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৯২ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪৭টি শেয়ার ৩৬ কোটি ৬৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ৩৩ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়েছে।