Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 11:23 pm

সাপ্তাহিক লেনদেনের ৩.২৫% লাফার্জহোলসিমের

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে সিমেন্ট খাতের কোম্পানি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির এক কোটি ৯৫ লাখ ২৭ হাজার ৫৯০টি শেয়ার ৭৫ কোটি ১৯ লাখ ১৪ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের তিন দশমিক ২৫ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর পাঁচ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমেছে।

সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের শেয়ারদর তিন দশমিক ৪৬ শতাংশ বা এক টাকা ৩০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ৩৬ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৩৬ টাকা ২০ পয়সা। দিনজুড়ে ২২ লাখ ২০ হাজার ৫৯৪টি শেয়ার মোট দুই হাজার ২২৫ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর আট কোটি ১৯ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৩৫ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৩৭ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ৩০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৪৯ টাকা ২০ পয়সায় ওঠানামা করে।

এদিকে সম্প্রতি হোলসিম সিমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেডকে (এইচবিএল) একীভূতকরণের অনুমোদন পেয়েছে সিমেন্ট খাতের কোম্পানি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড (এলএইচবিএল)। লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান হোলসিম সিমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেডকে একীভূতকরণের জন্য উচ্চ আদালতের অনুমতি পেয়েছে। কোম্পানিটি গত ২১ নভেম্বর এ-সংক্রান্ত সার্টিফাইড কপি পায়। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল ওই রায়টি রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টকে জমা দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি কোম্পানিটির বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) বিনিয়োগকারীরা এ দুই কোম্পানির একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে। উল্লেখ্য, হোলসিম সিমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেডের শতভাগ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছে। সিমেন্ট উৎপাদন ও বিপণনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হোলসিম সিমেন্টের অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা, যার সাধারণ শেয়ারের সংখ্যা ৪৫ লাখ এবং অগ্রাধিকারভিত্তিক পরিশোধযোগ্য শেয়ার পাঁচ লাখ, যেখানে প্রতি শেয়ারের মূল্য ১০০ টাকা। আর কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৮৮ লাখ ২৪ হাজার ৪০০ টাকা। যেখানে ১০০ টাকা দরের প্রতিটি সাধারণ শেয়ার সংখ্যা ৮৮ হাজার ২৪৪টি।

২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯৬ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৪১ পয়সা। এর আগে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা তার আগের বছরের সমান। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটি ইপিএস করেছে ৬৯ পয়সা ও এনএভি ১৩ টাকা ১৫ পয়সা। এটি আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে এক টাকা ৯২ পয়সা ও ১৩ টাকা ২৪ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৮০ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, যা আগের বছর ছিল ২২২ কোটি ৬৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

২০০৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি। এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন এক হাজার ১৬১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ৩৯৬ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ১১৬ কোটি ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৫০০টি শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৬৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ১৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীর শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে বাকি ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

আর লেনদেনের দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির এক কোটি ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫০টি শেয়ার ৫৯ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ৫৮ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর পাঁচ দশমিক ১৯ শতাংশ কমেছে।

এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর চার দশমিক ৯৬ শতাংশ বা দুই টাকা ৪০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ৪৬ টাকায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৪৫ টাকা ৭০ পয়সা। দিনজুড়ে ২৩ লাখ ৯২ হাজার ১০১টি শেয়ার দুই হাজার ৭৪৩ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ১১ কোটি ১৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৪৫ টাকা ৪০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ টাকা ৪০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ১৪ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৬৯ টাকা ৬০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।

কোম্পানির ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৩৭ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ২১ কোটি ৪২ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

বিমা খাতের এ কোম্পানিটি ২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির মোট তিন কোটি ৭৭ লাখ ৭৪ হাজার ৯৫০টি শেয়ার রয়েছে। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে ৩৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ২৫ দশমিক ৫২ শতাংশ ও বাকি ৩৭ দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ২৭ দশমিক ৫৩ ও হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে ২০ দশমিক ১৬।

কোম্পানিটি ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য ছয় শতাংশ নগদ ও ছয় শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময় শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৬৫ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ১৭ টাকা ৩৬ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৫৮ পয়সা। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে, যা তার আগের বছরের সমান। ওই সময় শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৬৬ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয় ১৯ টাকা ৬২ পয়সা, যা তার আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে এক টাকা ৭৭ পয়সা ও ১৯ টাকা ২৭ পয়সা। ২০১৭ সালে মোট মুনাফা করে পাঁচ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যা আগের বছর ছিল পাঁচ কোটি ৫২ লাখ টাকা।