নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে মূল্যসূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তেমন কোনো স্বস্তি দেখা যায়নি। গত সপ্তাহে লেনদেন কমার পরিমাণ ছিল ২৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে গত সপ্তাহে লেনদেন কমলেও এ সপ্তাহ বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন অনেক।
গত সপ্তাহের বাজার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ৫৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ২ হাজার ৬৯৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার। সেই হিসাবে গত সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ৬৪৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা বা ২৩.৮৬ শতাংশ।
ডিএসইর সার্বিক সূচক বা ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে দশমিক ৪৬ শতাংশ বা ২৪.৮৯ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই৩০ সূচক বেড়েছে দশমিক ৫৭ শতাংশ বা ১১.৩৭ পয়েন্ট। অন্যদিকে শরিয়াহ বা ডিএসইএস সূচক কমেছে দশমিক ১৩ শতাংশ বা ১.৬৩ পয়েন্টে।
এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৮টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৭৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টির। আর লেনদেন হয়নি ২টি কোম্পানির শেয়ার।
অন্যদিকে সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯২ দশমিক ৪৯ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
সাপ্তাহিক লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো ইফাদ অটোস, ইউনাইটেড পাওয়ার, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ব্র্যাক ব্যাংক, ইভিন্স টেক্সটাইল, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, মবিল যমুনা বিডি, ডরিন পাওয়ার ও অগ্নি সিস্টেমস।
দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, ব্যাংক এশিয়া, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, বিডিকম, এপেক্স ফুটও্যয়ার, সাউথইস্ট মিউচুয়াল ফান্ড ও ব্র্যাক ব্যাংক।
দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স, নর্দার্ন জুট, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, বে-লিজিং, পেনিনসুলা চট্টগ্রাম ও মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ।
এদিকে চলতি সপ্তাহ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা জানতে চাইলে বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টরা বলেন, এ সপ্তাহে বাজার ভালো যাবে। তাদের যুক্তি বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ভালো কিছু না থাকলেও ব্যাংকে অলস টাকা রাখার বিষয়ে কঠিন হওয়ার কারণে এ টাকা পুঁজিবাজারে আসবে। আর বাজারে নতুন অর্থ এলে ক্রমেই বাজারের চেহারা পাল্টে যাবে। জানতে চাইলে বিনিয়োগকারী লুৎফর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, ব্যাংকে আমানতে সুদের হার এমনিতেই অনেক কম। তার ওপর এখন থেকে বছরে প্রতি লাখে ৮০০ টাকা করে কেটে নেবে। আমার মতো অনেক ব্যাংক গ্রাহকই এটা মানতে পারবে না। সে কারণে তারা ব্যাংক থেকে পুঁজিবাজারে টাকা নিয়ে আসবে। আমি মনে করি পুঁজিবাজারে দেখেশুনে ভালো মানের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে ব্যাংক থেকে ভালো প্রফিট পাবো। অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য প্রত্যক্ষ তেমন কিছু না থাকলেও পরোক্ষভাবে কিছু ভালো দিক রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ব্যাংকে টাকা রাখার বিষয়। বছর শেষে ব্যাংক যে টাকা কেটে রাখবে, তাতে সাঁই নেই গ্রাহকদের। ফলে তারা ব্যাংক ছেড়ে পুঁজিবাজারে আসবে। এতে গতি পাবে পুঁজিবাজার।
Add Comment