প্রতিনিধি, সাভার (ঢাকা) : সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন করার কারণে সাভারের আশুলিয়ায় গতকাল রোববার ৬০টি পোশাক কারখানা বন্ধ রয়েছে। শনিবার এ বন্ধ কারখানার সংখ্যা ছিল ১৩০টি।
এদিকে আশুলিয়ায় খোলা থাকা কারখানাগুলোর মধ্যে ৮-১০টি কারখানার শ্রমিকরা সকালে কারখানায় এসে কার্ড পাঞ্চ করে কাজ না করে বসে ছিলেন। এসব কারখানার মধ্যে কিছু কারখানার শ্রমিকরা পরে কারখানা থেকে চলে যান। কিছু কারখানার শ্রমিকরা এখনও কারখানায় কাজ না করে বসে আছেন। কাজ না করায় কয়েকটি কারখানায় রোববার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম এ তথ্য জানান।
এদিকে গত কয়েক দিনে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনার পর এখন পর্যন্ত আশুলিয়া থানায় ১২টি মামলা করা হয়েছে। এতে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা তিন থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। এরই মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী কারখানার কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ১২টি মামলা করেছেন। এসব মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার জনকে। এরই মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সরেজমিনে আশুলিয়ার জামগড়া, নরসিংপুর, নিশ্চিন্তপুর ও জামগড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার বেশ কিছু কারখানার ফটকে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩(১) ধারা মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ লাগানো রয়েছে। সড়কে সাঁজোয়া যান নিয়ে টহল দিচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। এছাড়া আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১, ঢাকা জেলা পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যদের বিভিন্ন এলাকায় টহল দিতে দেখা যায়। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জলকামান।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, শনিবার শুধু আশুলিয়ায় বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩(১) ধারা মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কারখানার সংখ্যা ছিল শতাধিক। ধামরাইসহ সাভার আশুলিয়ায় মোট কারখানা বন্ধ ছিল ১৩০টি। আজ শুধু আশুলিয়ায় ৬০টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, গতকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দিচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। আশা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে দ্রুতই অন্যান্য কারখানাও খুলে দেয়া হবে।
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে সাভার ও আশুলিয়ার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। গত ৭ নভেম্বর ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা ঘোষণার পর ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করতে থাকেন শ্রমিকরা।