প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ:স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সারাদেশে ৫৭টি জেলার মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ রোগী ঢাকায় আর বাকি রোগীগুলো বিভিন্ন জেলায় আক্রান্ত হয়েছে। এ বছর ডেঙ্গু রোগ বেশি বেড়ে গেছে। সামনের আরও দুই মাসে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে পারে। গতকাল রোববার দুপুরের দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মানিকগঞ্জ জেলা শহরের গড়পাড়ায় নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গু অনেক বেড়েছে। এরই মধ্যে ৬৭ জন আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আরও ১২ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং আড়াই হাজার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। বৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে পানি জমাট বেঁধে মশার বংশবিস্তার ঘটেছে আর এতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
জাহিদ মালেক বলেন, আমরা ডেঙ্গু মোকাবিলা করে চলছি। সিটি করপোরেশন, পৌরসভাকে আহ্বান করছি, তারা যেন বেশি বেশি করে স্প্রে করে। শহরের যেসব স্থানে বৃষ্টির পানি জমাট বেঁধে থাকে এবং বসতবাড়ির উঠানে যে পানি জমে তা অপসারণ করতে হবে। এই পানি অপসারণ না করলে ডেঙ্গুর আরও ভয়াবহ অবস্থা হতে পারে। আমি মনে করি, সবাই মিলে কাজ করলে এই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব।
মন্ত্রী আরও বলেন, গত বছর এই সময়ে ডেঙ্গুর অবস্থা এত খারাপ ছিল না। এ বছর ডেঙ্গু রোগ বেশি বেড়ে গেছে। সামনের আরও দুই মাসে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। যারা একবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে তারা দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকাংশেই বেশি। সারাদেশের হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু ইউনিট রয়েছে, প্রশিক্ষিত নার্স ও ডাক্তার আছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত স্বাস্থ্য বিভাগ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনÑমানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি বাবুল সরকার, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফসার সরকার, ছাত্রলীগের সভাপতি এমএ সিফাত কোরাইশী সুমন ও সাধারণ সম্পাদক রাজিদুল ইসলাম প্রমুখ।
এদিকে ডেঙ্গুর অবস্থা সুখকর নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি নতুন করে মূল্যায়ন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রয়োজনে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে কর্মসূচি হাতে নেয়া হবে।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এলজিআরডি মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। গণমাধ্যমে কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঈদের সময় অনেকে বাড়ি গেছেন। সে সময় কোথাও কোথাও পানি জমতে পারে। বৃষ্টি থেমে থেমে হলে ডেঙ্গুর মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায়। জনগণের অংশগ্রহণ বেশি হলে, সচেতন হলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সহজ হয়। কিন্তু জনগণ বা সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে কি না, তা আবার মূল্যায়ন করা হবে। সিটি করপোরেশন ব্যর্থ বলা যাবে না। তাদের ত্রুটি বিচ্যুতির কোনো অভিযোগ এখনও পাইনি।
তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা এখনও খারাপ না। এর জন্য সন্তুষ্টির কিছু নেই। একজনও যদি আক্রান্ত বাড়ে সেটা আশঙ্কার। তাই মানুষকে সচেতন হতে হবে, আশপাশে পানি জমে থাকলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সরকারের একার পক্ষে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা কঠিন।