শেয়ার বিজ ডেস্ক: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে দেওয়া রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন ঠেকাতে নতুন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। খবর: ডয়চে ভেলে।
২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বারাক ওবামার রাজনৈতিক দল এই কৌশল নিয়েছিল। ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির প্রোফাইলে বিজ্ঞাপন দিয়ে ভোট চাওয়ার এ কৌশলকে বলে মাইক্রো টার্গেটিং। খুব সূক্ষভাবে ব্যবহারকারীর তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। তারপর ওই তথ্যের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞাপন সাজিয়ে নির্দিষ্ট ভোটারদের কাছে তা পৌঁছে দেওয়া হয়।
২০১৬ সালে যুক্তরাস্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে এমন প্রচারণা চালিয়েছিল ব্রিটিশ রাজনৈতিক কনসালটেন্সি ফার্ম ক্যাম্ব্রিজ অ্যানালিটিকা। পরে জানা যায়, কোম্পানিটি লাখ লাখ মানুষের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল।
ঠিক এখানেই আপত্তি করছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। সোমবার এ বিষয়ে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়। কাউন্সিল অব ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই চুক্তিতে বলা হয়, ইউনিয়নের নির্দিষ্ট শর্ত মানলেই কেবল এ ধরনের বিজ্ঞাপনের অনুমতি মিলবে। জোটের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
গোপন প্রভাব ঠেকানো
সদ্য সাক্ষরিত চুক্তির ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে তথ্য বিষয়ক নতুন একটি আইন প্রণয়ন সহজ হচ্ছে। আইনে বলা হচ্ছে, কোনো ব্যক্তির তথ্য তখনই সংগ্রহ করা যাবে, যদি সেই ব্যক্তি পূর্ণ সম্মতি প্রদান করে যে এই তথ্য রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা যাবে।
তাছাড়া যেসকল তথ্য ব্যক্তির জাতিগত পরিচয়, রাজনৈতিক মতাদর্শ এবং লিঙ্গভিত্তিক পরিচয় প্রকাশ করে সেসকল তথ্য সংগ্রহ করা যাবে না। এই আইনটি আনুষ্ঠানিকভাবে পাশ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
জার্মানির বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মার্টিন এমার ডয়চে ভেলেকে বলেন, নতুন আইনটি যে পুরোপুরি ব্যবহারকারীকে টার্গেট করা বন্ধ করে ফেলবে, বিষয়টি সেরকম নয়। এই আইনটি মূলত লুকানো প্রভাব ঠেকানোর জন্য করা হচ্ছে।
বিষয়টি এমন যে, কোনো রাজনৈতিক দল, যারা নিজেদের আদর্শ বা মতবাদ প্রকাশ না করে ব্যবহারকারীর তথ্য কাজে লাগিয়ে নিজেদের পক্ষে ভোটের প্রচার চালায় তাদের প্রভাব ঠেকানো।
আইনটি বলছে, রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনগুলো এমন হতে হবে যেন এগুলোকে পরিস্কারভাবে চিহ্নিত করা যায় এবং ব্যবহারকারী যেন এই বিজ্ঞাপনের পেছনে কারা রয়েছে, তা বুঝতে পারে।