সারাদেশে নজিরবিহীন বিক্ষোভ গুলিবিদ্ধ ১০, নিহত ১

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে ঢাকাসহ সারাদেশে নজিরবিহীন বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেশের প্রায় সব জেলায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশ নিয়েছেন। কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। এছাড়া তারা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে সাতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের শ্রীপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে এক ব্যবসায়ী মারা গেছেন। সিলেটে শিক্ষার্থী ও জনতার বিক্ষোভ চলার সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট, শর্টগানের গুলি ছুঁড়েছে। চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রী, স্থানীয় এক সংসদ সদস্য ও মেয়রের বাসায় হামলা চালানো হয়েছে। এতে পুলিশের গুলিতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বগুড়ায় পুলিশ-শিক্ষার্থীর সংঘর্ষে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

সিলেট : সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার নগরের চৌহাট্টা এলাকায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বিকাল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ২টা থেকে নগরের চৌহাট্টা এলাকায় শহীদ মিনারের সামনের সড়কে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি শুরু হয়। বিকাল ৫টার দিকে হঠাৎ পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশকে সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও শটগানের গুলি ছুড়তে দেখা যায়। সরেজমিনে দেখা গেছে, পুলিশের বাধায় আন্দোলনকারীরা চৌহাট্টা থেকে নয়াসড়ক, জিন্দাবাজার ও দরগা গেটমুখী সড়কের দিকে ভাগ হয়ে যায়। তিন দিক থেকে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষ চলছে। এ সময় একাধিক পুলিশ সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী ও অনেক শিক্ষার্থীকে আহত হতে দেখা গেলেও তাৎক্ষণিকভাবে কারও পরিচয় জানা যায়নি। সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখ বলেন, শিক্ষার্থীরা শুরু থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করায় পুলিশ বাধা দেয়নি। একপর্যায়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ চেষ্টা করে।

কুমিল্লা : কুমিল্লায় নগরীর পুলিশ লাইনস ও রেসকোর্স এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে স্বেচ্ছাসেবক ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় সাতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। চান্দিনায় এসিল্যান্ড ও মৎস্য কর্মকর্তার গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীরা হলেন আরফান মজুমদার (১৬), সৌরভ (২৫), মারুফ (১৬), আসিফ (১১), মৃদুল (১২), সুজন (১৩) ও সানি (১৮)। তাদের মধ্যে সৌরভকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর অন্যদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহত ব্যক্তিদের অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক শেখ ফজলে রাব্বি। তিনি বলেন, সৌরভের চোখের আঘাত গুরুতর। তাকে ঢাকায় চক্ষু ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় একাধিক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন, এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ তথ্যের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লায় কোনো শিক্ষার্থী মারা যাননি। সংঘর্ষের সময় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পুলিশ লাইনসে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিয়ে বাসায় পৌঁছে দিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার দায় অস্বীকার করে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা জামায়াত-বিএনপিকে প্রতিহত করতে মাঠে ছিলেন। তারা কোনো শিক্ষার্থীকে আঘাত করেননি। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়কদের একজন জান্নাতুল ইভা বলেন, হামলায় অনেকে আহত হয়েছেন। সরকারদলীয় লোকজনের এমন হামলার ঘটনায় নিন্দা জানান তিনি।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর বহদ্দারহাটের বাসায় হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে মেয়রের বাসায় হামলার চেষ্টা করা হয়। হামলাকারীরা মেয়রের বাড়ির মূল ফটক ভাঙার চেষ্টার করেন। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এদিকে নগরের বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই সংঘর্ষ শুরু হয়। এই সময় পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এ ঘটনায় তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সূত্র জানায়, গুলিবিদ্ধ তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তারা রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

ঢাকা: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের মোর্চাÑবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ মিছিলে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। শনিবার দুপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারে জড়ো হন তারা। সেখানে তারা সরকারের পদত্যাগসহ নানা সেøাগান দেন। বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, সংস্কৃতিকর্মী, শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়েছেন। ছাত্রদের এ বিক্ষোভ মিছিলে ডিবি কার্যালয়ে হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, আসিফ মাহমুদ, নুসরাত তাবাসসুম ও আবু বাকের মজুমদারের উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ঢাকার উত্তরা, বাড্ডা, মিরপুর, শনিরআখড়া, শাহবাগসহ ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন এবং সড়ক অবরোধ করেন।
বরিশাল : বরিশালে ভারী বৃষ্টি উপেক্ষা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলে করেছেন। শনিবার দুপুরে তারা নগরের নথুল্লাবাদ ও আমতলা মোড়ে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় নগরের চৌমাথা এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মৃধা নামে ট্রাফিক পুলিশের একটি বক্স ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) খাবার সরবরাহকারী একটি ট্রাক ভাঙচুর করা হয়। বেলা আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে আজ বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সরকারি ব্রজমোহন কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভে অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করেন। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ এলাকায় যান। এখানে তাদের সঙ্গে যোগ দেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাদের হাতে ছিল বিশাল জাতীয় পতাকা ও বিভিন্ন সেøাগান লেখা প্ল্যাকার্ড। এ বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনেক অভিভাবককেও অংশ নিতে দেখা যায়। এতে মহাসড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। কর্মসূচি চলাকালে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের অপরদিকে পেট্রল পাম্পে একটি ছেলেকে ধারালো অস্ত্রসহ এক যুবককে অবস্থান নিতে দেখে শিক্ষার্থীরা মারধর করেন।

ট্রাফিক বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার তানভীর আরফাত জানান, হামলাকারীরা পুলিশ বক্সে হামলা করেছেন। এ ছাড়া তারা খাবার নিয়ে আসা এপিবিএনের একটি ট্রাকও ভাঙচুর করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ছেড়ে যান। বগুড়া: বগুড়ায় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে বেশ কয়েক শিক্ষার্থী আহত হন। শনিবার বিকাল ৪টার দিকে শহরের সাতমাথা থেকে মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণকালে এ ঘটনা ঘটে। বিকাল সাড়ে ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শহরের সাতমাথা, সার্কিট হাউস মোড়, জেলা জজ আদালতের সামনের সড়ক, কালীবাড়ি মোড়সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সরকার পতনের একদফা দাবিতে বেলা আড়াইটা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হাজারো শিক্ষার্থী-জনতা সাতমাথা এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের মিছিল-সেøাগানে সাতমাথা এলাকা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

মিছিলের একাংশ সার্কিট হাউস মোড় অতিক্রম করার সময় পুলিশ প্লাজার সামনে পুলিশের সাঁজোয়া যান লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীরা ইটপাটকেল ছোড়েন। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে মুহুর্মুহু কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে সার্কিট হাউসের অভ্যর্থনা কক্ষের কাচ ভাঙচুর করেন। দুই পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েক শিক্ষার্থী আহত হন। পরে জলেশ্বরীতলা, সাতমাথা, সার্কিট হাউস মোড়, জেলা জজ আদালতের সামনের সড়ক, কালীবাড়ি মোড়সহ গোটা শহরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে সংঘর্ষ সাতমাথা, সার্কিট হাউস মোড়সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, বিক্ষোভকারীরা জিলা স্কুলের সামনে ও পুলিশ প্লাজার সামনে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিনা উসকানিতে ইটপাটকেল ছুড়লে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার বিষয়টি তার জানা নেই।
শ্রীপুর (গাজীপুর) : গাজীপুরের শ্রীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনায় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের দাবি, পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। মরদেহ হাসপাতালের স্ট্রেচারে করে নিয়ে বিক্ষোভ করে আন্দোলনকারীরা। তবে পুলিশ বলছে, তিনি গুলিতে মারা যাননি।
উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা আজ তিনটি পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দিয়েছে। পরে তারা মাওনা হাইওয়ে থানায় হামলা চালিয়ে ভেতরে থাকা দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। সংঘর্ষে পুলিশের রাবার বুলেটে শতাধিক আহত হয়েছে।


নিহত জাকির হোসেনের (৪৩) বাড়ি সাতক্ষীরা বলে জানা গেছে। শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া বেপারীবাড়ি এলাকায় তার লেপ-তোশকের দোকান রয়েছে। পুলিশ বলছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। শ্রীপুর থানার ওসি আকবর আলী খান বলেন, পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যু হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ছোটাছুটি করার সময় মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। মরদেহ পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। পটুয়াখালী: বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আন্দোলনকারীরা হঠাৎ চারদিক থেকে মিছিল নিয়ে সার্কিট হাউসসংলগ্ন শহীদ মিনার চত্বরে জড়ো হন। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে চৌরাস্তা গিয়ে অবরোধ করে আবার শহীদ মিনার চত্বরে অবস্থান নেন। রংপুর : সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে হাজারো মোমবাতি জ্বালিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতের স্মরণ করেন তারা। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে অংশ নিয়েছেন অভিভাবক ও সর্বস্তরের মানুষ।

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : মহাসড়কের সানারপাড় অংশে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী লেন বন্ধ করে হয়ে যায়। ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। যশোর : গণহত্যা ও গণ-গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে যশোরে বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শহরের পালবাড়ি মোড়ে বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সমবেত হতে থাকে। ফলে সড়কে হাজারো মানুষের ঢল নামে। সাতক্ষীরা : ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। দুপুরে শহরের খুলনা রোড মোড় থেকে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে খুলনা রোড মোড়ে ফিরে আসে। পরে তারা সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।


ঝিনাইদহ : দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে হাজারো ছাত্র-শিক্ষক-জনতা রাজপথে নেমে আসেন। মিছিল-সেøাগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে শহর। এ সময় শহরে চলাচলকারী সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নারায়ণগঞ্জ: শিক্ষার্থীদের গণমিছিলে পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনেক অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেন। কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় মহাসড়ক দখলে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের চৌড়হাঁস থেকে মজমপুর গেট পর্যন্ত অবরোধ করে রাখেন। এর আগে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শহরের সাদ্দাম বাজার মোড়ে শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
ময়মনসিংহ: সরকারের পদত?্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে ময়মনসিংহে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ কমিউনিটি পার্টি (সিপিবি)। সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের শহীদ ফিরোজ-জাহাঙ্গীর চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০