নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ থেকে সারা দেশে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিবন্ধনধারীদের টিকাদান শুরু হচ্ছে। এজন্য এক হাজারের বেশি টিকাদান কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। গতকাল এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, করোনায় স্থবির হয়ে যাওয়া বিশ্বে টিকাদান শুরু হয়েছে বেশকিছু দিন হলো। সেই টিকা বাংলাদেশে এসেছে জানুয়ারির শেষ নাগাদ। টিকা কার্যক্রম শুরু করতে দেশে টিকা প্রয়োগের প্রথম দিন এক হাজার ১৫টি কেন্দ্রকে প্রস্তুত করা হয়েছে। টিকাদানে নিয়োজিত থাকবে স্বাস্থ্যকর্মীদের দুই হাজার ৪০২টি দল।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, টিকার জন্য নিবন্ধন করা না থাকলেও কেন্দ্র থেকে কাউকে ফেরত পাঠানো হবে না। কেন্দ্রেই নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হবে। কয়েকশ ব্যক্তিকে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ১০ দিন পর বাংলাদেশে গণটিকাদান শুরু হচ্ছে আজ। সকাল ৯টায় তা শুরুর কথা।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে বাংলাদেশ শুরু করেছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লড়াই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর এবং মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম আলম জানান, ঢাকায় ৫৬টি স্থানে টিকাদান হবে। সেখানে কাজ করবে স্বাস্থ্যকর্মীদের ২০৬টি দল।
ঢাকার বাইরে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলিয়ে ৯৫৯ স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এসব জায়গায় দুই হাজার ১৯৬টি দল টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দুজন স্বাস্থ্যকর্মী এবং দুজন স্বেচ্ছাসেবক মিলিয়ে প্রতিটি দলে চারজন সদস্য থাকবেন।
ডা. নাজমুল আরও জানান, প্রত্যেকটি দলের স্বাস্থ্যকর্মীরা সর্বোচ্চ ১৫০ জনকে টিকা প্রয়োগ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে সব মিলিয়ে প্রথম দিনে তিন লাখ ২৯ হাজার ৪০০ জন মানুষকে টিকা দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে। তিনি বলেন, এ সংখ্যাটি কমবেশি হতে পারে। এসব দল প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করবে। প্রথম দিন সবাই কাজ করবে, ব্যাপারটি এমন নয়। টার্নআউট কম হলে লোকজন কম কাজ করবে। পুরোপুরি কাজ থাকলে প্রত্যেকেই জয়েন করবে। তিনি জানান, ৭ ফেব্রুয়ারি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টিকা নেয়ার জন্য কয়েকটি স্থান নির্ধারণ হয়েছে।
সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্যরা মহাখালীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে টিকা নেবেন। সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সচিবালয় ক্লিনিক এবং সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, আইনজীবীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকা নিতে পারবেন। ডা. নাজমুল বলেন, এর বাইরেও সবাই নিজের পছন্দমতো জায়গা থেকে টিকা নিতে পারবেন।
আজ শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক টিকা নেবেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, নিবন্ধন না করলেও কেন্দ্রে এসে টিকা নিতে পারেন এমন ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে টিকা নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে হবে।
টিকাদানের আগে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করতে না পারলে টিকাগ্রহীতার সব তথ্য রেখে দেয়া হবে, স্বাস্থ্যকর্মীরা পরে তা ডেটাবেজে তুলে দেবেন। তিনি বলেন, অনেকের কাছে স্মার্টফোন নেই, অনেকে নিবন্ধন করতে পারবেন না। এ কারণে চেয়ারম্যান থেকে শুরু মেয়র-এমপিরা থাকবেন। মানুষকে কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন, টিকা দেবেন এবং নিবন্ধন করাবেন।
টিকা দেয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়ে টিকা নিতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।