নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের সীমান্তবর্তী ৩২ জেলার সীমান্ত দিয়ে পর্যায়ক্রমে উন্নত মানের সড়ক নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান। এরই অংশ হিসেবে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় প্রায় চার হাজার ৪৬০ কোটি ৫৪ লাখ টাকার সাতটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাত প্রকল্পের বাস্তবায়ন ব্যয় চার হাজার ৪৬০ কোটি ৫৪ লাখ টাকার মধ্যে সরকারি অর্থায়ন চার হাজার ৩৪৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং দুটি সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকবে ১১৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের পরিকল্পনামন্ত্রী এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে, তাই পর্যায়ক্রমে আমরা সব সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করে ফেলব। দেশের অর্থনীতি ও নিরাপত্তাসহ নানা খাতে অবদান রাখবে এসব সীমান্ত সড়ক। মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা আন্তঃজেলা সড়ক চার লেন করছি। গ্রামের সড়ক উন্নয়ন করছি। এখন সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করব।
তিনি জানান, এসব প্রকল্পের অন্যতম ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার অংশ (প্রথম সংশোধিত)। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলা এবং নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটির মেয়াদ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত। ৫৫৯ কোটি ৫৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হবে এ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়িত হলে নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলা এবং ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলার সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এছাড়া আন্তঃজেলা সীমান্ত সড়ক সহজ ও দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চান, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে দেশের চার হাজার ২৪৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। পুরো সীমান্তে সড়ক নির্মাণে কতদিন সময় লাগবে? এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, পুরো সীমান্তে সড়ক নির্মাণের বিষয়ে নির্দিষ্ট সময়মীসা নির্ধারণ করা হয়নি। তবে পর্যায়ক্রমে পুরো সীমান্তে সড়ক নির্মাণে আমাদের জাতীয় লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে।
সভায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো: ১. মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণসহ ভূমি উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প; ২. রাজশাহী মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণার্থে নর্দমা নির্মাণ, তৃতীয় পর্যায় (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প; ৩. মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ প্রকল্প; ৪. প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সক্ষমতা জোরদারকরণ প্রকল্প; ৫. পাওয়ার গ্রিড নেটওয়ার্ক স্টেংদেনিং প্রজেক্ট আন্ডার পিজিসিবি (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প; ৬. সিলেট, লালমনিরহাট ও বরিশাল ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি স্থাপন প্রকল্প।