অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও প্রতিভা মানুষকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। এমনই উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন রংপুর নগরীর পীরজাবাদ এলাকার ২৪ বছর বয়সী যুবক এমবি সালেহ আহমেদ। আরসি প্লেন আবিষ্কার করে সরকারের সহযোগিতার আশায় আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
ক্ষুদ্রাকায় উড়োজাহাজের পরীক্ষামূলক উড্ডয়নকালে নানা বিষয় তুলে ধরেন সালেহ। তিনি জানান, রংপুর সদরের শ্যামপুর বন্দর এলাকার মাহফুজুর রহমান ও সালমা বেগমের কনিষ্ঠ সন্তান তিনি। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে ছোট এই যুবক পীরজাবাদ এলাকায় বড় বোনের বাড়িতে বেড়ে ওঠেন। এলাকার স্কুলে প্রাথমিক পর্যায়ের পড়ালেখা শেষ করে চন্দনপাট মাদরাসা থেকে ২০১১ সালে দাখিল পাস করেন। এরপর নগরীর কেরামতিয়া ইনস্টিটিউট সায়েন্স অব টেকনোলজি থেকে ডিপ্লোমা করেন। পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে তিনি উচ্চতর শিক্ষা অর্জন করতে পারেননি।
সালেহ অনেকটা শখের বশে ডিপ্লোমা অধ্যয়নকালে প্রথম রিমোর্ট কন্ট্রোল ড্রোন তৈরি করে ইনস্টিটিউটের শিক্ষকমণ্ডলী ও সহপাঠীদের তাক লাগিয়ে দেন। সে সময় তার গবেষণালব্ধ ওই আবিষ্কারের পুরস্কারস্বরূপ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। তার প্রত্যাশা, সরকারি সহযোগিতা পেলে এই আরসি প্লেন (রিমোর্ট কন্ট্রোল প্লেন) দেশের কাজে লাগাতে পারবেন। এজন্য তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সালেহ কোনো জনবল ছাড়াই ইলেকট্রিক চার্জবিহীন সোলার প্যানেলের মাধ্যমে ড্রোনটি তৈরি করেছেন। এর সাহায্যে রংপুর নগরীর ট্রাফিক সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এছাড়া রংপুরের আশেপাশ কিংবা ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরত্বের কোনো জরুরি রোগী, ওষুধ কিংবা পণ্য চালকসহ চার থেকে পাঁচজনের বহনযোগ্য উড়োজাহাজ নির্মাণ সম্ভব বলেও জানান। সর্বোপরি দেশের সীমান্ত পর্যবেক্ষণে নজরদারির কাজেও এই ড্রোন ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিবেগে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করে যে কোনো এলাকার ক্রাইম ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা সম্ভব বলে জানিয়েছে তিনি। নগরীর একজন সাধারণ যুবকের এই উদ্যোগ ও আবিষ্কারের বিষয়ে সহযোগিতার বিষয়ে রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, সালেহ জেলা প্রশাসক বরাবর ওই বিষয়ে আবেদন করলে তা তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।
হুমায়ুন কবীর মানিক, রংপুর