গতকালের পর
খাদ্যতালিকায় সব গ্রুপের খাবার থাকতে হবে, যেমন প্রোটিন, শর্করা, ফ্যাট, ভিটামিন ও মিনারেলযুক্ত খাবার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার-জাতীয় খাবার। সম্ভব হলে লাল চালের ভাত কিংবা লাল আটার রুটি খেতে পারলে ভালো। লাল চাল কিংবা লাল আটাতে ক্যালরি কম, কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার বা খাদ্য-আঁশ রয়েছে, যা আমাদের পেটে অনেকক্ষণ থেকে আমাদের ক্ষুধা লাগা থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘসময় রোজা রাখা অনেকটাই সহজ হয়। এর সঙ্গে অবশ্যই প্রথম শ্রেণির প্রোটিন, যেমন মাছ, মুরগির মাংস, কিংবা ডিম রাখতে পারেন। বাজারের এ ঊর্ধ্বগতির মূল্যে অনেকের পক্ষেই প্রতিদিন হয়তো মাছ, মাংস, কিংবা ডিম ক্রয় করা খুব কঠিন হতে পারে। তাই এ অতিরিক্ত বাজারদরের সময় আমরা যদি সপ্তাহের সাত দিন ভাগ করে প্রথম শ্রেণির প্রোটিন গ্রহণ করতে পারি; যেমনÑসপ্তাহে দুদিন মাছ, এক দিন মুরগির মাংস, দুদিন ডিম এবং বাকি দুদিন পাঁচমিশালি ডাল, ছোলা, সয়া বা টফু, শিমের বিচি ইত্যাদির মাধ্যমে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এর সঙ্গে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে তাজা শাকসবজি ও ফলমূল রাখতে হবে ভিটামিন ও মিনারেলস পাওয়ার জন্য। এসব খাবারের মাধ্যমেই পেতে পারি পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সাহরিতে এক কাপ তরল দুধ, কিংবা হাফ কাপ টক দই রাখতে পারেন। দই হচ্ছে খুব ভালো মানের প্রো-বায়োটিক, যা খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে ভালো মানের ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে হজমে সহায়তা করে এবং গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনকে সুস্থ রাখে। সাহরিতে চিড়া-দই-কলা কিংবা দুধ-চিড়া-কলাও খেতে পারেন। এতে করে পেট ঠাণ্ডা থাকবে এবং সব পুষ্টি উপাদানও পাবেন। যাদের ব্লাড সুগার স্বাভাবিক আছে, তারা সাহরিতে একটি খেজুর খেতে পারেন।
ইফতারের খাবার কেমন হবে
খেজুর: ইফতারে অবশ্যই একটি অথবা দুটি খেজুর বা খুরমা খাবেন। খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেলস এবং যথেষ্ট পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার। খেজুরের ইনস্ট্যান্ট সুগার বা চিনি আমাদের সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে খুব সহজে। একটি খেজুর থেকেই খুব দ্রুত এনার্জি পেতে পারি। খেজুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। পানি ও পানিজাতীয় খাবার: সারাদিন রোজা রেখে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত শরবত খেলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত আট থেকে ১০ গ্লাস কিংবা ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি খাওয়া প্রয়োজন। [চলবে]
সামসুন নাহার স্মৃতি
পুষ্টিবিদ, উত্তরা ক্রিসেন্ট হসপিটাল, উত্তরা, ঢাকা