‘সাহসে ভর করে বুক চিতিয়ে’ রাজপথে আসুন: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ জানিয়ে যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে, তার প্রতিবাদে দুই দিনের হরতালে ‘সাহসের ওপর ভর করে’ বুক চিতিয়ে রাজপথে নেমে আসার আহŸান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। হরতালের আগের দিন গতকাল শনিবার বিকালে অজ্ঞাত স্থান থেকে ভার্চুয়াল বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি। তার এই বক্তব্য বিএনপির ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

রোববার ভোর ৬টা থেকে বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ‘শান্তিপূর্ণ’ হবে বলে জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের পক্ষ থেকে আমি এই হরতালকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য, এই হরতালকে বাস্তবায়ন করার জন্য সর্বমহলে সর্বদিক থেকে আপামর জনসাধারণ প্রত্যেককে আহŸান জানাচ্ছি। দলের নেতা-কর্মী ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা জোট ও দলের প্রতিও উদাত্ত আহŸান জানাচ্ছি। সবাই সাহসের ওপর ভর করে বুক চিতিয়ে রাজপথে উপস্থিত হবেন।’

নির্বাচনকালীন তত্ত¡াবধায়ক সরকারের দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে বিএনপি টানা কর্মসূচি দিয়ে এলেও নেতা-কর্মীদের রাজপথে সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। ঝটিকা মিছিল করে ফেসবুকে পোস্ট করে সটকে পড়ছেন তারা।

রিজভী নিজেও আছেন আত্মগোপনে। তিন দিন ভোরে তাকে রাজধানীর তিনটি এলাকায় ঝটিকা মিছিলে দেখা গেছে। প্রতিদিনই তিনি বক্তব্য দিচ্ছেন ভার্চুয়ালি।

বিএনপির এই আন্দোলনের মধ্যে গত বুধবার তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ৩১ অক্টোবর থেকে সরকারি ছুটির দিন ও দুটি মঙ্গলবার ছাড়া প্রতিদিন অবরোধ পালন করে আসা বিএনপি এর প্রতিক্রিয়ায় রোববার ও সোমবার হরতালের ডাক দিয়েছে।

রিজভী বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার এই হরতাল হচ্ছে অধিকার আদায়ের হরতাল, এই হরতাল হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে হরতাল, এই হরতাল হচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষকে অন্যায়ভাবে জুলুম-নিপীড়ন-নির্যাতন করে ফরমায়েশি রায়ে শাস্তি, যে ভয়ংকর ও পৈশাচিক নির্যাতন করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের হরতাল। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে এই হরতাল। এই দাবি জনগণের দাবি। সারাদেশের মানুষ বহুদিন ধরে অধিকারবঞ্চিত, তাদের মালিকানাবঞ্চিত। জনগণের মালিকানা জনগণকে ফেরত দিতেই এই দুর্বার আন্দোলন।’

বিএনপি নেতা বলেন, ‘জনগণ রাজপথে নেমেছে অধিকার আদায়ের দুর্বার

আন্দোলনে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন হবে। আপনারা যে তফসিল ঘোষণা করেছেন, তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন, নির্বাচন স্থগিত করে আগে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় এই ফরমায়েশি ‘এক তরফা’ নির্বাচন জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করবে।’

কারাগারগুলোয় ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বন্দিতে মহাবিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘অনেককে আটকে রেখে মুক্তিপণ নিচ্ছে পুলিশ। নেতা-কর্মীদের না পেয়ে তার স্বজন-আত্মীয়দের আটক করে মারধর করছে তারা।’

শেখ হাসিনা ‘গ্রেপ্তার বাণিজ্যের লাইসেন্স’ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘কার্যত দেশে আইনের শাসনের মূলোৎপাটন করা হয়েছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে দেয়া হচ্ছে না।’

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩০২ জন এবং ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ হাজার ২১০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের অভিযোগও আনেন রিজভী।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০