Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 11:35 pm

সা ত কা হ ন: তানজিনা ফেরদৌস

সিলেটের মেয়ে তানজিনা ফেরদৌস সম্প্রতি সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মন্টক্লেয়ার স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে। এরপর নিউ জার্সির পিটারসন পাবলিক স্কুলে টিচার অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে যোগ দিয়েছেন। এর আগে এখানকার একটি গ্রোসারি শপে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন তিনি। ২০১০ সালে সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হয়েছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগে।

শাবিপ্রবিতে স্নাতক সম্পন্ন না করেই ২০১৪ সালে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে; মা ও বোনের কাছে। একই বছরের শেষের দিকে ভর্তি হন মন্টক্লেয়ার স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। শাবিপ্রবিতে তিন বছর স্নাতক পর্যায়ে পড়ালেখা করলেও ফল প্রকাশে বিলম্বের কারণে তৃতীয় বর্ষের কোর্সগুলোর ক্রেডিট ট্রান্সফার করা যায়নি। কিন্তু প্রথম চার সেমিস্টারের ক্রেডিট ট্রান্সফার করা গেছে অনায়াসে। তাই দেশে সম্পন্ন করা অধিকাংশ কোর্সই তাকে নতুন করে পড়তে হয়নি।

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্রেডিট ট্রান্সফারের অভিজ্ঞতা কেমন? এর উত্তরে তিনি বলেন, খুবই সহজ। ট্রান্সক্রিপ্ট ও কোর্স ক্যাটালগ থাকলে আর কিছু লাগে না। শিক্ষার্থী কী পড়েছেন তা ক্যাটালগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাডমিশন অফিস দেখে। তা ছাড়া সাস্টের (শাবিপ্রবি) কারিকুলাম আর এখানকার কারিকুলামের মধ্যে মিল থাকায় আমার সুবিধা হয়েছে।

প্রবাসের দিনগুলো প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে তানজিনাকে। একে তো মায়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার মতো দুঃসংবাদ, সঙ্গে নানাবিধ পারিবারিক ঝামেলা লেগেই ছিল। সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে হয়েছে তাকে। একই সঙ্গে পড়ালেখাও চালিয়ে গিয়েছেন। ‘আপনি যে পরিস্থিতিতে থাকুন না কেন, পাসের আগ পর্যন্ত অ্যাসাইনমেন্ট, ইংলিশ স্পিকিং, অন্য পরীক্ষা পিছু ছাড়ে না। তাই ধৈর্য নিয়ে কাজ করতে হয়,’ বলেছেন তানজিনা।

ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে ছিল তানজিনার। তাই শাবিপ্রবিতে ভর্তির পরও মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। সেই স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় কোনো আক্ষেপ নেই তার।

ব্যস্ততা, মা ও বোনের সান্নিধ্য এসব মিলে কখন সময় কেটে যায়, তা টের পাওয়া যায় না। তারপরও বাংলাদেশকে মিস করেন তিনি। পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য তানজিনা বলেন, এখানে এত ব্যস্ততা যে দেশের প্রিয় মুখগুলো অতটা মিস করার সুযোগও মেলে না। তারপরও একান্তে যখন ভাবি, কেমন জানি শূন্যতা বোধ হয়। ভবিষ্যতে শিক্ষক কিংবা সমাজকর্মী হওয়ার ইচ্ছে আছে তার।

 

আব্দুল্লাহ আল নোমান