সা ত কা হ ন

নিয়াজ আহমেদ: পছন্দসই কাজ ও ব্যতিক্রমী কিছু করার তাড়না থেকেই তিনি আজ দেশের অন্যতম সিভি রাইটিং প্রতিষ্ঠান করপোরেট আস্কের সিইও। বলছিলাম নিয়াজ আহমেদের কথা।

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন ২০১১ সালে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ। বিষয় ছিল ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম। ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি একাধিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। কিন্তু মানসিক সন্তুষ্টি পাচ্ছিলেন না কোথাও।

মানুষকে নিয়ে ভাবতেই বেশি আগ্রহ বোধ করেন নিয়াজ। তাদের ক্যারিয়ারবিষয়ক নানা পরামর্শ দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি। এ থেকেই সিদ্ধান্ত নেন, ক্যারিয়ারবিষয়ক প্রশিক্ষণ দেবেন। তাই চলতে থাকে পরিকল্পনা ও খুঁটিনাটি কাজ গোছানো। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরির অভিজ্ঞতা কাজে লাগান। এ অভিজ্ঞতা সম্বল করে তিনি ক্যারিয়ার গঠনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করেন।

শুরুর পথটা তার জন্য মসৃণ ছিল না। কেউই তাকে প্রশিক্ষক হিসেবে আমন্ত্রণ জানাতে চাইতো না। কেননা বয়সে একেবারে তরুণ ছিলেন। প্রচলিত ধারণা হলো, ‘করপোরেট ট্রেনারের বয়স হতে হবে বেশি।’ তবে চেষ্টা ও উদ্যমতা থাকলে তাকে রোখে কার সাধ্য! এভাবে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে ট্রেনিং করানোর সুযোগ পেতে শুরু করলেন। সঙ্গে শুরু করলেন সিভি রাইটিংবিষয়ক কর্মশালাও। ভালো লেগে যায় বিষয়টি। সিদ্ধান্ত নেন, এটা নিয়ে তিনি কিছু একটা করবেন। লন্ডনে পড়তে যাওয়ার স্কলারশিপ পেয়ে যান এ সময়। কিন্তু গেলেন না। থেকে গেলেন দেশে। সিভি রাইটিংকে এদেশে পেশাদারি পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াই এখন তার ধ্যান-জ্ঞান। সে উদ্দেশ্য থেকেই মূলত প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘করপোরেট আস্ক’।

২০১৬ সালের জানুয়ারিতে মাত্র ৯টি সিভি লেখার কাজ নিয়ে শুরু করেন তিনি। বর্তমানে তার লেখা সিভির সংখ্যা ১৫০০’র অধিক। দেশের নামি-দামি নানা প্রতিষ্ঠানের বড় পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ম্যানেজার পর্যায়ের লোকদের জন্যও সিভি তৈরি করে দেন তিনি।

নিয়াজ আহমেদ যে শুধু সিভিই লেখেন তা কিন্তু নয়। ক্যারিয়ারবিষয়ক নানা টিপস নিয়ে লেখালেখিও করেন। ইতোমধ্যে ৮০টিরও অধিক ক্যারিয়ারবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করেছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত সেমিনারেও ট্রেনার হিসেবে উপস্থিত থাকেন।

বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপদ ক্যারিয়ারের হাতছানিকে দূরে ঠেলে তিনি সিভি রাইটিংকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। এক সময় যারা তাকে ট্রেনার হিসেবে নিয়োগ দিতে চায়নি, তারাও আজ তাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সব স্বপ্নই পূরণ করা সম্ভব। দরকার একটু লেগে থাকা।’

হিমেল হাসান, সাংবাদিক