নিজস্ব প্রতিবেদক: পেশাগত অসদাচরণ ও অদক্ষতার প্রাথমিক প্রমাণ মেলায় নাটোর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক নয়ন কুমারকে আপাতত তদন্তকাজ থেকে বিরত রাখতে বলেছেন হাইকোর্ট।
বগুড়ায় এক শিশুর কাছ থেকে তার ছোট ভাই হত্যার স্বীকারেক্তি আদায় করার প্রেক্ষাপটে গতকাল সোমবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
সেই সঙ্গে মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই, পিবিআই বগুড়া) মো. মনসুর আলীকে ২৭ সেপ্টেম্বর মামলার মেডিকেল রিপোর্ট, নতুন নেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দি ও আদালতের আদেশের অনুলিপি দাখিল করতে বলা হয়েছে।
শুনানির এক পর্যায়ে এ মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কুমার সম্পর্কে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা এখানে বিষয় না, সে (নয়ন কুমার) অপরাধ করেছে।’
সারিয়াকান্দির সাবেক এসআই নয়ন তখন আদালতে ছিলেন। আর বগুড়া থেকে আদালতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন মামলাটির বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা মনসুর আলী।
আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
শিশির বলেন, ‘মামলাটির যথার্থতা ও আইনগত দিক পর্যালোচনার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে করা আবেদনটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় পরিদর্শক নয়ন কুমার কোনো তদন্তকাজ করতে পারবেন না।’
জোর করে ১২ বছর বয়সী শিশুর স্বীকারোক্তি নেয়ার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে বগুড়ার আদালতে বিচারাধীন হত্যা মামলার যথার্থতা ও আইনগত বিষয় পর্যালোচনায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবী গত ২০ জুন আবেদন করেন।
২৯ জুন আবেদনটির ওপর শুনানির পর হাইকোর্ট ‘জোর করে’ স্বীকারোক্তি আদায়ের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে নয়নকে তলব করে। সেই সঙ্গে মামলাটির কেস ডকেট (সিডি) নিয়ে বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা মনসুর আলীকেও আদালতে যুক্ত থাকতে বলা হয়।
নির্দেশমতো ২২ আগস্ট সকালে মনসুর ও নয়ন আদালতে হাজির হন এবং ১২ বছর বয়সী শিশুর কাছ থেকে জোর করে স্বীকারোক্তি নেয়ার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন।
সেদিন আদালত স্বীকারেক্তি আদায় করার ঘটনাকে তদন্তকারী কর্মকর্তার ‘ভুল নয়, মারাত্মক অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
আর নয়ন কুমারের লিখিত ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হওয়ায় সোমবার পরবর্তী শুনানির জন্য রেখে নয়ন কুমারকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়। আদেশ অনুযায়ী আদালতে হাজির হন নয়ন কুমার। এরপর শুনানির পর আদালত আদেশ দেন।
