নিজস্ব প্রতিবেদক: বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের চাহিদা পূরণ করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পর এবার সুবিধা দিয়েছে ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারি আমানতের অর্ধেক পাওয়ার পর আরও বড় ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক ছাড় পেয়েছে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। এবার সিআরআরে এক শতাংশ ছাড় পেয়েছে এসব ব্যাংক। ফলে ব্যাংকগুলোর আমানতের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত নগদ জমা থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা ফেরত পাবে ব্যাংকগুলো।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটারি পলিসি ডিপার্টমেন্টের এক সার্কুলারে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সব তফসিলি ব্যাংকগুলোকে তাদের মোট তলবি ও মেয়াদি দায়ের সাড়ে ছয় শতাংশ দ্বি-সাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে এবং ন্যূনতম ছয় শতাংশ দৈনিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ জমা হিসেবে সংরক্ষণ করতে হয়। তবে আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে দ্বি-সাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে সাড়ে পাঁচ শতাংশ এবং দৈনিক ভিত্তিতে ন্যূনতম পাঁচ শতাংশ নগদ জমা সংরক্ষণ করতে হবে।
অর্থাৎ এখন থেকে ব্যাংকগুলোর আমানতের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যে নগদ টাকা জমা রাখা (সিআরআর) হয়, সেখান থেকে এক শতাংশ কম রাখতে পারবে। এর ফলে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর জমা রাখা সাড়ে ছয় শতাংশ থেকে এক শতাংশ সমপরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা তুলে নেবে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনী বছরে ব্যাংক মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ওই সভা শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বেসরকারি ব্যাংকে ৫০ শতাংশ সরকারি আমানত রাখার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছি তা বহাল থাকবে। সরকারি টাকার অর্ধেক বেসরকারি ব্যাংকে রাখা যাবে। অন্য সুবিধা (সিআরআর) আমি দিতে পারি না। ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক গভর্নর। আমি শুধু প্রভাবিত করতে পারি। এছাড়া এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। ব্যাংকগুলোকে সাড়ে ছয় শতাংশ নগদ জমা রাখতে (সিআরআর) হয়, তা এক শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি অবশ্য জুনের মধ্যে রিভিউ হবে, যা সালমানের (সালমান এফ রহমান) আইডিয়া।
এ বিষয়ে দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যে প্রক্রিয়ায় টাকা বের করা হলো, তা মোটেও ঠিক হয়নি। বিএবি নেতা, অর্থমন্ত্রী এবং গভর্নর মিলে এভাবে টাকা নিতে পারেন না। এ টাকা দেওয়া হবে কি হবে না সেটা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব ছিল গভর্নরের। কিন্তু তাকে প্রভাবিত করতে পারেন না অর্থমন্ত্রী। এটা নজিরবিহীন।