শেয়ার বিজ ডেস্ক: সংস্কারের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেডে (সিইউএফএল) নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন চালু রাখতে জাপানের সহায়তা চেয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। তিনি বলেন, জাপানি টয়ো ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন নির্মিত এ কারখানা দীর্ঘদিন ধরে ইউরিয়া উৎপাদন করে আসছে। রিঅ্যাক্টরে কারিগরি সমস্যা থাকায় কারখানাটিতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তিনি কারখানাটির আধুনিকায়ন ও সংস্কারে জাপানের সহযোগিতা কামনা করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো গতকাল শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ সহায়তা চান। শিল্প মন্ত্রণালয়ে এ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগসহ শিল্প মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের চিনিশিল্প খাতে পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, সার কারখানার আধুনিকায়ন, দক্ষ জনবল তৈরিতে প্রশিক্ষণ, অটোমোবাইল, হালকা প্রকৌশল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, মেডিকেল ও সায়েন্টিফিক ইকুইপমেন্ট শিল্প খাতে জাপানি বিনিয়োগসহ-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় আলোচনায় স্থান পায়।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে টয়োটা ব্র্যান্ডের গাড়ির ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিশাল বাজার সুবিধা ও জনপ্রিয়তা বিবেচনায় জাপানি টয়োটা কোম্পানি বাংলাদেশে গাড়ি উৎপাদনে বিনিয়োগ করতে পারে। এ কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে টয়োটা বাংলাদেশের চাহিদা মিটিয়ে জাপানের বাজারেও গাড়ি রপ্তানির সুযোগ পাবে। তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোয় বাইব্যাক পলিসির আওতায় ডিস্টিলারি স্থাপনসহ পণ্য বৈচিত্র্যকরণে জাপানি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের উদীয়মান হেলথ ইন্ডাস্ট্রির সুবিধা নিতে মেডিকেল ও সায়েন্টিফিক ইকুইপমেন্ট উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ও সর্ববৃহৎ উন্নয়ন অংশীদার হতে পেরে জাপান গর্বিত। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে জাপান কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল, মেট্রোরেলসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে জাপানি বিনিয়োগ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে টয়োটা ব্র্যান্ডের গাড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যে একটি বাস্তবসম্মত অটোমোবাইল পলিসি প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব দেন। এ পলিসি প্রণয়নে জাপান বাংলাদেশকে কারিগরি সহায়তা দিতে আগ্রহী বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছে যাবে। এক সময় বাংলাদেশের তৈরি গাড়ি জাপানের বাজারেও বিক্রি হবে। তিনি বাংলাদেশে মোটরসাইকেল শিল্পের বিকাশে এর নিবন্ধন ফি ও কর যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণের ওপর গুরুত্ব দেন। ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ জোগান থেকে সার সরবরাহ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। জাপান টোব্যাকো বাংলাদেশ সরকারকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি তামাকশিল্পের ওপর আরোপিত এক্সাইজ ডিউটি যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণের আহ্বান জানান।