Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 10:29 am

সিইসির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল

নিজস্ব প্রতিবেদক:‘গণসংহতি আন্দোলনকে’ রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিতে আদালতের রায় ও নির্দেশনা না মানায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) বিরুদ্ধে অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার অভিযোগে সিইসির বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

তিন বছর আগে ‘গণসংহতি আন্দোলনকে’ রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিতে সদ্য বিদায় নেয়া কে এম নূরুল হুদাকে আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। কিন্তু তার মেয়াদের মধ্যে তিনি আদালতের রায় এবং আদেশ পালন না করায় রুলের জবাব বর্তমান সিইসিকেই দিতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির আবেদনের ওপর শুনানি করে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এই রুল জারি করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবেদনটি সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদার বিরুদ্ধেই করা হয়েছিল। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে সিইসি পরিবর্তন হওয়ায় আদালতের নির্দেশে বর্তমান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে বিবাদী করা হয়েছে। এখন রুলের জবাব বর্তমান সিইসিকেই দিতে হবে।’

রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন নিতে ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে গণসংহতি আন্দোলন। তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন কে এম নূরুল হুদা। পরের বছর ইসি এক চিঠিতে জানিয়ে দেয়, গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেয়া যাবে না।

ইসির ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে প্রধান সমন্বয়কারী মো. জোনায়েদ আব্দুর রহিম সাকি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

প্রাথমিক শুনানির পর আদালত রুল জারি করে। সেই রুলের শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল হাইকোর্ট রায় দেয়। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেয়ার আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়া হয়।

পরে গণসংহতি আন্দোলন ওই রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি নির্বাচন কমিশনে দাখিল করে। তারপরও তাদের রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিতে নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় এবং এ বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রশ্নে সাড়া না দেয়ায় গত বছরের ১০ অক্টোবর আইনজীবীর মাধ্যমে সিইসি নূরুল হুদাকে নোটিস পাঠায় দলটি।

ওই নোটিসের পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন কমিশন নিবন্ধনের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় জোনায়েদ সাকি চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে আদালতে আবেদন করেন। এর মধ্যে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গত কমিশনের মেয়াদ শেষ হলে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পায়।