নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেটে সিগারেট খাতে রাজস্ব আহরণ বাড়ছে। গত পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৩৫ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২১৫ কোটি টাকা বেশি। শুধু সিগারেট খাতেই এ কমিশনারেটের প্রবৃদ্ধি ৫১ শতাংশ। এছাড়া নভেম্বর মাসে সর্বোচ্চ ১৬০ কোটি টাকার রাজস্ব জমা পড়েছে।
সিগারেট খাতে নানামুখী অভিযান পরিচালনা করে অবিশ্বাস্য সাফল্য এসেছে বলে মনে করেন ভ্যাট কর্মকর্তা ও কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা। মূলত বর্তমান কমিশনারের সুদক্ষ নির্দেশনা ও সার্বিক তদারকির প্রেক্ষিতে যোগদান পরবর্তী সময় থেকে ধারাবাহিক নিবারনী কার্যক্রম পরিচালনার ফলে রাজস্ব জমা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেট সূত্র জানায়, নভেম্বর মাসে সিগারেট খাতে লাকসাম ভ্যাট সার্কেলে অর্থবছরের সর্বোচ্চ ১৬০ কোটি টাকা রাজস্ব জমা হয়েছে; যা গত অর্থবছরের নভেম্বরের চেয়ে ১০ কোটি টাকা বেশি। এছাড়া চলতি অর্থবছর জুলাই মাসে ১২৫ কোটি, যা গতবছরের জুলাইয়ের চেয়ে ৫ কোটি টাকা বেশি। আগস্ট মাসে ১০০ কোটি টাকা, যা গতবছরের আগস্টের চেয়ে ৭৫ কোটি টাকা বেশি। সেপ্টেম্বর মাসে ১২৫ কোটি টাকা, যা গতবছরের সেপ্টেম্বরের চেয়ে ১০০ কোটি টাকা বেশি। অক্টোবর মাসে ১২৫ কোটি টাকা, যা গতবছরের অক্টোবরের চেয়ে ২৫ কোটি টাকা বেশি।

সূত্র জানায়, কুমিল্লা কমিশনারেটের অধীন একমাত্র প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে রাজস্ব জমা হয়েছে ৬৩৫ কোটি। গত অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সিগারেট খাতে রাজস্ব জমা হয়েছে ৪২০ কোটি। গত অর্থবছরের ৫ মাসের আদায়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার ৫১ শতাংশ। কমিশনারেটের আওতাধীন সদর দপ্তর, কুমিল্লা ও ছয়টি বিভাগ (কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া) নকল, জাল, পুন: ব্যবহূত ব্যান্ডরোল প্রতিরোধে মোট ৪৯টি অভিযান পরিচালনা করে। এতে ২৮ লাখ বিড়ি ও সিগারেট আটক করা হয়, যার মূল্য ৭৪ লাখ টাকা।

আবুল খায়ের টোব্যাকোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নকল, জাল ব্যান্ডরোল, স্ট্যাম্প বিশিষ্ট সিগারেট ও বিড়ির বিরুদ্ধে প্রিভেন্টিভ অভিযান অব্যাহত থাকার কারণে বিগত সময়ের তুলনায় সিগারেটের চাহিদা ক্রমেই বেড়ে চলছে। ফলে রাজস্ব আহরণ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে লাকসাম সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক বলেন, অভিযান পরিচালনার কারণে নকল, জাল, পুন: ব্যবহূত ব্যান্ডরোল আটক করা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি তত্ত্বাবধানাধীন সরবরাহ, পর্যবেক্ষণ ও নজরদারির লক্ষ্যে সদর দপ্তর কুমিল্লা হতে একাধিক টিম গঠন করায় পালাক্রমে প্রতিষ্ঠানে রোস্টার ডিউটি চলমান আছে বিধায় সিগারেট খাতে রাজস্ব বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

কুমিল্লা কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার (সদর) মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন রিপন বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সাহস ও উদ্যম নিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রাজস্ব আদায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। নকল, জাল, পুন: ব্যবহূত ব্যান্ডরোল প্রতিরোধের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, করোনাকালে কুমিল্লা টিমে বিশেষ তৎপরতা অব্যাহত থাকে। কমিশনারেটের অধীন ১৬টি সার্কেল ও ৬টি বিভাগের সবাই পরিশ্রম করছে। ভয়কে জয় করে তারা মাঠে কাজ করছেন। দলবদ্ধ প্রচেষ্টা ও সুস্থ প্রতিযোগিতা-এ অভূতপূর্ব সাফল্যের কারণ। কর্ম প্রবণ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের বাছাই করে গুরুত্বপূর্ণ ও জটিলতর কাজে নিয়োগ, মনিটরিং ও উদ্বুদ্ধকরণ এক্ষেত্রে গতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে।
###