সিঙ্গাপুরে জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ২.৪%

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সিঙ্গাপুরে ভোক্তা ব্যয় বেড়েই চলেছে। চলতি বছর জানুয়ারিতেও এ ধারা অব্যাহত ছিল বলে জানায় দেশটির পরিসংখ্যান ব্যুরো। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে তারা জানায়, এই মূল্যস্ফীতি সহসা স্থিতিশীল হবে না। খবর: দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।

মূল্যস্ফীতির পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে খাদ্য, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য। দেশটিতে গত মাসে কোর মূল্যস্ফীতি বেড়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে। এর আগে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে এমন পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিল। গত বছর ডিসেম্বরে এ খাতের মূল্যস্ফীতি ছিল ২ দশমিক ১ শতাংশ।

মানিটারি অথরিটি অব সিঙ্গাপুর (এমএএস) ও মিনিস্ট্রি অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমটিআই) এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, গত জানুয়ারিতে দেশটিতে সার্বিক (হেডলাইন) মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ৪ শতাংশ। খাদ্য, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দামের পাশাপাশি খুচরা পর্যায়ে পণ্যের দাম না কমায় এই উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণ। তবে ব্ল–মবার্গের অর্থনীতিবিদরা কোর মূল্যস্ফীতি বেড়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৪ দশমিক ২ শতাংশ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।

এমএএস ও এমটিআই জানায়, সম্প্রতি বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি আরও বেড়েছে এবং বছরের মাঝামাঝির পর এটি কমে আসতে পারে। অদূর ভবিষ্যতেও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সরবরাহ সংকটের কারণে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়বে। এর প্রভাব পড়বে সিঙ্গাপুরের অর্থনীতিতেও। শ্রমিক সংকটে পড়তে পারে দেশটি। শ্রমবাজার আরও সংকুচিত হতে পারে। বছরের ব্যবধানে মজুরি বাড়তে পারে। আর কোর মূল্যস্ফীতি শিগগির কমবে না বলে মনে করে এ দুই সংস্থা। তাছাড়া উড়োজাহাজ ভ্রমণের খরচ বাড়তে পারে, যা নিকট ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি বাড়াবে।

সামগ্রিকভাবে চলতি বছর মূল্যস্ফীতি গড়ে দুই শতাংশ থেকে বেড়ে তিন শতাংশ হতে পারে। তবে তা ২ দশমিক ৫ থেকে বেড়ে ৩ দশমিক ৫ শতাংশও হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জানুয়ারিতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ। জ্বালানি শক্তির দাম বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে শুল্ক বৃদ্ধি পায়। বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রতি কিলোওয়াটের দাম বাড়ে ২৭ দশমিক ২২ শতাংশ, এর আগের প্রান্তিকে যা ছিল ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ। এ সময় গ্যাসের দাম বাড়ে ২১ দশমিক ৬২ সেন্ট। জানুয়ারিতে বিদ্যুতের শুল্ক বেড়েছে ২২ দশমিক ৬ শতাংশ। এ সময় গ্যাসে শুল্ক বাড়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ।

খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বাড়ে ২ দশমিক ৬ শতাংশ, যা রান্না করা ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় বলে জানায় এমএএস ও এমটিআই। একই সময় খুচরা ও অন্যান্য পণ্যের দাম ধীরগতিতে কমেছে। পোশাক, জুতা ও কসমেটিকস পণ্যের দাম কিছুটা কমে; কিন্তু ওষুধ, মেডিকেল পণ্য ও গৃহস্থালি পণ্যের দাম বেড়েছে। ঘরভাড়া বেড়ে যাওয়ায় আবাসন খাতে মূল্যস্ফীতি দেখা গেছে। বিমানভাড়ার খরচ কমেছে জানুয়ারিতে।

কভিড-১৯ বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করায় এ খাতে ব্যয় কমেছে, যা ডিসেম্বরের চেয়েও কম ছিল। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এমএসএস আসছে এপ্রিলে আবার আর্থিক নীতি রিভিউ করবে।

এদিকে দেশটির অর্থমন্ত্রী লরেন্স ওং বলেন, সরকার মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখতে চেষ্টা করছে। নাগরিক সুযোগ-সুুবিধা আরও বাড়ানো হবে। দেশটির ২০২২ সালের বাজেট নিয়ে চ্যানেল ফাইভকে তিনি বলেন, পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগেই সরকার সামাল দিতে পারবে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা অনুষ্ঠানে তিনি জানান, মূল্যস্ফীতি আরও স্থায়ী হলে বা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হলে সরকার তা মোকাবিলায় আর্থিক খাতের উন্নয়নে গুরুত্ব দেবে। একই সঙ্গে ক্রমবর্ধমান দামের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সিঙ্গাপুরবাসীদের আরও সহায়তা দেয়া হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০