নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা মহামারির ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মতো কমনওয়েলথ দেশেগুলোর টেক্সটাইল এবং গার্মেন্ট শিল্পের পুনরুদ্ধারে সহায়তার জন্য কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের (সিডব্লিউইআইসি) সমর্থন চায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান এফবিসিসিআই।
গত বুধবার অনুষ্ঠিত ‘সিডব্লিউইআইসি সেক্টর ওয়েবিনার: টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে এফবিসিসিআই’র সহসভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান এ কথা বলেন। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ওই ওয়েবিনারে বাংলাদেশ থেকে বিজিএমইএ’র সভাপতি রুবানা হকও অংশ নেন। ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন সিডব্লিউইআইসি’র ডেপুটি চেয়ারম্যান হুগো সুইয়ার।
ওয়েবিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশ নিয়ে এফবিসিসিআই’র সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, দেশের শিল্প খাতের অগ্রগতি পুনরুদ্ধার করতে সাপ্লাই চেইন, যাতায়াত, পণ্য পরিবহন, উৎপাদন, আমদানি-রপ্তানি, তারল্য ও অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি, সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা খাতকে সহায়তার লক্ষ্যে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এফবিসিসিআই বিস্তৃত পরিসরে আর্থিক ও অ-আর্থিক ব্যবস্থাসহ আর্থ-সামাজিক এজেন্ডা নিয়ে আগামী তিন বছরের জন্য একটি শক্তিশালী রোডম্যাপ প্রণয়নে সহায়তা করেছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া ফ্রন্টলাইনার ও প্রান্তিক গোষ্ঠীসহ সরকারকে সহায়তা করার জন্য একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ফেস মাস্ক তৈরি করতে পেরেছি। এছাড়া এফবিসিসিআই বাণিজ্যিক কর্মকর্তা, শিল্প ও অন্যান্য ব্যবসায়িক খাতের জন্য কভিড-১৯ এফবিসিসিআই স্বাস্থ্য পরামর্শক প্রোটোকলও তৈরি করেছে, যাতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতেও লজিস্টিক, খুচরা, কৃষিসহ বিভিন্ন খাতের কার্যক্রম পুনরায় চালু করা যেতে পারে।
সরকারের প্রশংসা করে তিনি আরও বলেন, অর্থ সরবরাহ, ব্যাংকিংয়ে তারল্য বৃদ্ধি, সাড়ে চার কোটি মানুষের খাদ্য সহায়তা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি এবং ৫০ লাখ পরিবারে নগদ অর্থ প্রদান করতে জন্য সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ দশমিক এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামগ্রিক আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদান করেছেন। যার মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ ব্যবসা, রপ্তানি, কৃষি ও অন্যান্য খাতে ব্যাপক পরিসরে সহায়তা করা হচ্ছে। সংকটের সময়ে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা সরকারের তাৎক্ষণিকতা ও বিচক্ষণ প্রতিক্রিয়ার একটি অংশ ছিল।
সাপ্লাই চেইন ব্যাহত হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এ সংকটে আমরা সবাই একসঙ্গে এগিয়ে চলেছি। এ অভূতপূর্ব সংকট থেকে উত্তরণের জন্য একসঙ্গে কাজ করা এবং একে অন্যকে সহযোগিতা করা জরুরি। এ সংকট কাটিয়ে উঠতে সিডব্লিউইআইসিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
সিডব্লিউইআইসি প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে কমনওয়েলথ দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে রুবানা হক বলেন, শুধু যুক্তরাজ্য থেকে প্রায় ৫২৬ মিলিয়ন ডলার অর্ডার বাতিলের কারণে আমাদের জন্য প্রাথমিক অবস্থা বেশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল। অন্যদের তুলনায় আমাদের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন ছিল, কারণ আমাদের চার দশমিক এক মিলিয়ন শ্রমিক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ এবং আমাদের দেশের প্রাণোচ্ছল মানুষগুলো আমাদের দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করেছে।
তিনি আরও বলেন কমনওয়েলথের মাত্র আটটির মতো দেশ বাংলাদেশ থেকে সোর্সিং করে থাকে। এর মধ্যে মোট সোর্সিং ১০ বিলিয়নও অতিক্রম করে না, যেখানে কমনওয়েলথ দেশগুলো ৫১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের পোশাক আমদানি করে বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে। আমাদের অবশ্যই হতাশ হয়ে বসে না থেকে সবার সহযোগিতাকে পুঁজি করে কাজ করতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের একাধিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা করছি এবং আমরা শিগগিরই ভালো ফলাফল দেখতে পাওয়ার আশা করছি।
ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের ৩২তম বার্ষিক সাধারণ সভা
সম্প্রতি ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের ৩২তম বার্ষিক সাধারণ ভার্চুয়াল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কোম্পানির চেয়ারম্যান এনামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভাইস চেয়ারম্যান ইলিয়াস সিদ্দিকী, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল খালেক, বিমা দাবি কমিটির চেয়ারম্যান ছবিরুল হক, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান দিদারুল আনোয়ার, নমিনেশন ও রিমিউনারেশন কমিটির চেয়ারম্যান জামাল আবদুল নাছের চৌধুরী, পরিচালক জয়নুল আবেদীন জামাল, বেগম খাদিজাতুল আনোয়ার, মুখ্য নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএমএম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি