‘সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০১৯’-এর সমাপনী

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের সবচেয়ে বড় সিএসআর প্রোগ্রাম ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০১৯’-এর সমাপনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। চীনের শেনজেনে হুয়াওয়ের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ আইসিটি শিক্ষার্থীর ভূয়সী প্রশংসা করেন।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে সহায়তা করছে হুয়াওয়ে। ‘ভিশন ২০২১’ বাস্তবায়নে হুয়াওয়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হুয়াওয়ের পাবলিক রিলেশনশিপ ডিরেক্টর ইয়ান লি ও ইথিওপিয়ার ১০ শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা চীনে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হয়েছে। বেইজিংয়ে তারা চীনা ভাষার ওপর কোর্স করেছে। চায়নিজ ক্যালিগ্রাফি ও তাইজি সম্পর্কে ধারণা পেয়েছে। শেনজেনে গিয়ে শিক্ষার্থীরা টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক, আইসিটির মূল প্রযুক্তিসমূহ, মোবাইল কমিউনিকেশনের বিভিন্ন জেনারেশন (১জি থেকে ৫জি), কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডেটা, ক্লাউড কম্পিউটিং, এজ কম্পিউটিং, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) এবং ৪জি ও ৫জি বেইজ স্টেশন তৈরি সম্পর্কিত বিভিন্ন ধারণা ও প্রায়োগিক শিক্ষা পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। পরবর্তীকালে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানীয় পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১০ জন আইসিটি শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছেÑঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (বুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। চীনে নিয়ে যাওয়ার আগে গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর হোটেল আমারি-তে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয় হুয়াওয়ে বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ই-ট্রান্সপোর্ট, ই-এডুকেশন, সেইফ সিটি ও স্মার্ট সিটি, ই-ব্যাংকিং ও ই-গভর্ন্যান্স বিষয়ে প্রকল্প উপস্থাপন করে।
১৯ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা চীনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করে। পরদিন শিক্ষার্থীদের ঘুরে দেখানো হয় চীনের মহাপ্রাচীর ও ফরবিডেন সিটি। এরপর বেইজিংয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানায় হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষ। চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তী দুই সপ্তাহ শিক্ষার্থীরা চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা সংস্কৃতি বিষয়ে ধারণা লাভ করে। পরে শিল্পক্ষেত্রের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও সর্বশেষ প্রযুক্তি নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তাদের নিয়ে যাওয়া হয় শেনজেনে, হুয়াওয়ের প্রধান কার্যালয়ে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে ইয়ান লি বলেন, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রাণঢালা অভিনন্দন। বাংলাদেশ অসাধারণ গতিতে এগিয়ে চলেছে। এ গতি ধরে রাখতে পারলে দেশটি ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হবে। এমন একটি দেশের ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ায় প্রধান অংশীদার হওয়াটা হুয়াওয়ের জন্য গর্বের। আমরা গত ২০ বছর বাংলাদেশের আইসিটি বিভাগ তথা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছি, যা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। হুয়াওয়ে সবসময় বাংলাদেশ ও এর মেধাবীদের পাশে থাকবে। এটি একটি দারুণ ব্যাপার যে, আমরা বাংলাদেশের দক্ষ ও মেধাবী তরুণ প্রজন্ম তৈরিতে অবদান রাখতে পারছি আমাদের সিডস ফর দ্য ফিউচার প্রোগ্রামের মাধ্যমে। আমরা যে তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক উন্নত ও সংযুক্ত বিশ্বের স্বপ্ন দেখি, আশা করি এই শিক্ষার্থীরাই হবে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের অগ্রপথিক। আশা করছি চীনে এই শিক্ষা সফরে এসে শিক্ষার্থীরা যে অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ লাভ করেছে সেটা তাদের বাস্তব কর্মজীবনে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ প্রোগ্রামটি ২০০৮ সালে শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ১০৮টি দেশ ও অঞ্চলে প্রতিযোগিতা চালু হয়েছে। এ পর্যন্ত বিশ্বের ৩৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থী হুয়াওয়ের হেডকোয়ার্টারে শিক্ষা সফরে গিয়ে হাতে-কলমে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য বিশ্বমানের প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য নতুন আইসিটি মেধাবীদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করা এবং শিল্প ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে যে মেধাবী কর্মীর ঘাটতি দূর করা।

যানজট নিরসনে বাংলা ট্র্যাকের ‘ইয়েস পার্কিং’
রাজধানীতে অঅনুমোদিত পার্কিংয়ের কারণে সৃষ্ট যানজট সমস্যা নিরসনে ‘ইয়েস পার্কিং’ নামে নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে বাংলা ট্র্যাক গ্রুপ। এ গ্রুপটি মূলত বাংলাদেশে জ্বালানি ও বিদ্যুৎসহ আইসিটি খাতের পণ্য ও সেবার জন্য পরিচিত। তাদের তৈরি অ্যাপটি ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি ঘণ্টা ভিত্তিতে পার্কিং স্পেস ভাড়া নিতে রেজিস্টার করতে পারবে।
ইয়েস পার্কিং মূলত ডিজিটাল পার্কিং প্লেস হিসেবে সেবা দেবে, যার মাধ্যমে মানুষ গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য উম্মুক্ত স্পেস খুঁজে পাবে এবং মালিকরা তাদের পার্কিং স্পেস ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। এ প্ল্যাটফর্মটি নগরবাসীর জন্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে পার্কিং স্পেস শনাক্ত ও রিজার্ভ করতে সহায়তা করবে, যা রাজধানীতে পিক আওয়ারে গাড়ির যানজট কমাবে। এছাড়া যদি কোনো পার্কিং স্পেস খালি বা অব্যবহৃত থাকে তাহলে এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মালিকরা তা ভাড়া দিতে পারবেন।
বাংলা ট্র্যাক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম জাহাঙ্গীর আলম এফসিএমএ বলেন, আমরা মানুষের প্রয়োজন বিবেচনা করি এবং সচেতনতার সঙ্গে তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো (যেমন নেভিগেশন ও পার্কিং স্পেস খুঁজে পেতে) সমাধান করতে পরিকল্পনা করি। এখন পার্কিং স্পেস কোনো সমস্যাই না।
‘ইয়েস পার্কিং’ অ্যাপটি গুগল থেকে ডাউনলোড করা যাবে। এ ধরনের উদ্ভাবনী কাজের জন্য বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ফরেস্টারের তালিকাভুক্ত হয়েছে বাংলা ট্র্যাক। আরও জানতে ভিজিট করতে পারেন go.forrester.com/blogs/telcos-must-prioritize-innovations-that-extend-beyond-networking ওয়েবসাইটটি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০