নিজস্ব প্রতিবেদক: সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য রায়সহ নথিপত্র ‘ডেথ রেফারেন্স’ হিসেবে পাঠানো হয়েছে হাইকোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুর রহমান গতকাল এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এখন যাচাই-বাছাই হবে। অন্যান্য আরও কাজ আছে, সেগুলো করতে হবে। এরপর বলা যাবে শুনানি কবে হবে।’
নিন্ম আদালতের বিচারে কারও ফাঁসির রায় হলে দণ্ডিতরা আপিল না করলেও সেটা সরাসরি কার্যকর করা যায় না, সেজন্য হাইকোর্টের অনুমতি লাগে। এই অনুমতির জন্যই বিচারিক আদালত থেকে উচ্চ আদালতে পাঠানো হয় ডেথ রেফারেন্স।
সিনহা হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীর ফাঁসির রায় হয়েছে। তাদের মৃত্যুদণ্ডের কারণে হাইকোর্টে রায়টি এসেছে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে।
এর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ক্রমানুসারে তা শুনানির জন্য প্রস্তুত করা হয়। মৃত্যুদণ্ড বা অন্যান্য দণ্ডে দণ্ডিতরা বা অন্য যে কোনো পক্ষ আপিল করলে সেই শুনানিও একসঙ্গে হয়।
এই শুনানির পর হাইকোর্ট রায় দিলে যেকোনো পক্ষ চাইলে তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করতে পারেন। সেখানে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পরও যদি কারও মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে, তাহলে সেটা কার্যকর করার আগে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারবেন। এরপর আসবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রসঙ্গ।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর চেকপোস্টে গুলি করে হত্যা করা হয় সিনহাকে। সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেয়ার পর কয়েকজন তরুণকে সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণবিষয়ক তথ্যচিত্র বানানোর জন্য কক্সবাজারে গিয়েছিলেন তিনি।
টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ওসি প্রদীপের বন্দুকযুদ্ধের ছদ্মাবরণে হত্যা ও চাঁদাবাজির ঘটনা জেনে যাওয়ায় সিনহাকে পরিকল্পিতভাবে প্রদীপ হত্যা করেন বলে আদালতের রায়ে উঠে এসেছে।
গত ৩১ জানুয়ারি ওই রায়ে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের
বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল প্রদীপ ও লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার পাশাপাশি তিন পুলিশ সদস্য এবং পুলিশের তিন সোর্সকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মামলার ১৫ আসামির মধ্যে বাকি চার পুলিশ সদস্য ও তিন এপিবিএন সদস্যকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে রায়ে।
বিচারিক আদালতে দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তি হওয়া মামলাটি উচ্চ আদালতেও শুনানির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে কি নাÑএমন প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন, ‘এটা এখনই বলা যাচ্ছে না।’
