সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের দর লাগামহীন

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: কোনো কারণ ছাড়াই বাড়ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর। সম্প্রতি এ শেয়ারের দর বাড়ছে লাগামহীনভাবে, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখছেন সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বাজারসংশ্লিষ্ট সবাই। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার নিয়ে কারসাজি হচ্ছেÑএমন আশঙ্কার কথা বলছেন তারা।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, প্লাস্টিক প্যাকেজিং পণ্য উৎপাদনকারী সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর সর্বশেষ ছয় কার্যদিবসে আট টাকা ২০ পয়সা বেড়েছে। বিষয়টি সন্দেহজনক বলে মনে করছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। যেজন্য দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছে সিনোবাংলাকে।

জবাবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শেয়ারের দর বৃদ্ধি পেতে পারে এমন কোনো সংবেদনশীল তথ্য তাদের কাছে নেই।

এদিকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি কর্তৃপক্ষের কাছে মূল্য সংবেদনশীল কোনো তথ্য না থাকলেও বাজারে গুজব রয়েছে যে, ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা এ প্রতিষ্ঠানটি অচিরেই লভ্যাংশ প্রদান করবে। সেজন্যই এর শেয়ারের দর বাড়ছে।

তবে বিষয়টি পাত্তা দিতে নারাজ বাজারসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এ ধরনের গুজবের ওপর ভিত্তি করে শেয়ার কেনাবেচা করা বোকামি।

এ প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘কোম্পানির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না দিলে তা কখনও সংবেদনশীল তথ্য হতে পারে না। এটা সব কোম্পানির বেলায়ই প্রযোজ্য। তাই বিনিয়োগকারীদের গুজব থেকে দূরে থাকা উচিত।’

প্রতিষ্ঠানটির লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, গত এক মাসের ব্যবধানে এর প্রতিটি শেয়ারের দর বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা। এক মাসে আগে এ শেয়ারের দর ছিল ৩৬ টাকা ৩০ পয়সা। গতকাল যা লেনদেন হয়েছে ৪৫ টাকা ৭০ পয়সায়, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দর। অন্যদিকে এ সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শেয়ার সর্বনি¤œ ২১ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়।

আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়,  ১৯৯৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সাল থেকে প্রতিবছর ১০ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করে ক্যাটাগরি ধরে রেখেছিল। পরে লভ্যাংশ না দিতে পারায় ২০১৬ সালে জেড ক্যাটাগরিতে চলে যায় প্রতিষ্ঠানটি। তালিকাভুক্ত এ প্রতিষ্ঠানের মোট শেয়ারের মধ্যে ৫৩.৫৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। এ ছাড়া ৩০.৬১ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে আছেন  পরিচালকরা। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৯.৫৮ শতাংশ বিদেশি এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৬.২৫ শতাংশ শেয়ার।

প্রতিবেদন অনুযায়ী চলতি হিসাববছরের  প্রথম নয় মাসে অর্থাৎ গত মার্চ পর্যন্ত সিনোবাংলা শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) করেছে এক টাকা ২১ পয়সা।  গত বছরের ২৭ অক্টোবর আট মাসের আর্থিক প্রতিবেদন (১ নভেম্বর ২০১৫ থেকে ৩০ জুন ২০১৬) পর্যালোচনা করে সময়মতো  লভ্যাংশ না দেওয়ায় কোম্পানিটি জেড ক্যাটাগরিতে চলে যায়। যদিও পরে ডিভিডেন্ডের টাকা দিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণের কথা জানানো হয়। এ লক্ষ্যে বিদেশ থেকে একটি ভিআইজেড, একটি টেপ লাইন, ২০টি লুম, একটি বেল প্রেস মেশিনসহ অন্যান্য মেশিনারিজ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছে সিনোবাংলা। আর এতে কোম্পানিটির মাসিক উৎপাদন ১৫০ মেট্রিক টন বাড়বে বলে জানা গেছে।

 

 

 

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০